সুকুমার সরকার, ঢাকা: মহামারী করোনা সংক্রমণ (Coronavirus) ঠেকাতে ইদ শেষে আরও এক দফা লকডাউন (Lockdown) বাড়ছে বাংলাদেশে। ১৬ মে থেকে নতুন করে লকডাউন শুরু হতে চলেছে। এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসিনা প্রশাসন। সেইসঙ্গে ১০০ শতাংশ মানুষের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে পুলিশকে বাড়িত ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। কাউকে মাস্কহীন অবস্থায় দেখলে পুলিশ শাস্তি হিসেবে ‘লাঠিপেটা’ করতে পারে।
করোনার সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানাও করা হয়েছে অনেককেই। তবুও সবাইকে মাস্ক (Mask) পরতে বাধ্য করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের বর্তমান আইনে জনসাধারণকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে খুব বেশি কঠোর হতে পারে না পুলিশ। ফলে পুলিশকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাস্ক না পরলে যাতে পুলিশ জনগণের উপর প্রয়োজনে ‘লাঠিপেটা’ও করতে পারে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ”যারা মাস্ক পরছে, তারা সেভ থাকছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে না যে করোনা সহজে চলে যাবে। আমরা মাস্ক পরা শতভাগ নিশ্চিত করতে চাই। এর জন্য আইন সংশোধন করে জরিমানা-সহ আইনে আরও কঠোরতা রাখা যায় কিনা, সেটা ভাবছি।”
[আরও পড়ুন: ভারতে আটকে পড়া নাগরিকদের স্বস্তি দিয়ে ৩ স্থলবন্দরের মুখ খুলল বাংলাদেশ]
সূত্রের খবর, সীমিত সংখ্যক মোবাইল কোর্ট দিয়ে এই কার্যক্রম বিস্তার বা জোরদার সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য পুলিশকে কঠোর হতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত সাত সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে সবশেষ ২৪ মার্চ করোনা ভাইরাসে এর চেয়ে কম অর্থাৎ ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সময় মাস্ক পরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পুলিশকে যে কোনওভাবে নির্বাহী ক্ষমতা-সহ পুলিশ যাতে পেটাতে পারে সে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
[আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে টানাপোড়েন চিন-বাংলাদেশের, QUAD নিয়েও বেজিংকে কড়া বার্তা ঢাকার]
বৈঠকে মাস্ক না পরলে শাস্তি কী হবে?এমন আলোচনার সময় একজন কর্মকর্তা ‘বেতের বাড়ি’র প্রস্তাব করেন। কিন্তু প্রচলিত আইনে পুলিশের বেতের বাড়ি দেওয়ার সুযোগ নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে আরেকজন আলোচক প্রয়োজনে আইনি সুযোগ তৈরির প্রস্তাব করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ‘বেতের বাড়ির’ বিষয়টি কীভাবে আইনি পরিকাঠামোতে আনা হবে, তা ভাবা হচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, জরুরি জনস্বার্থ বিষয়ক প্রয়োজনে সরকার বেতের বাড়ি দেওয়ার প্রভিশন আইনে যুক্ত করতে পারে। সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ আইন বা অন্য কোনও আইনে তা বৈধতা দেওয়া হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পুলিশের কাছে নির্বাহী ক্ষমতা না দিলে তারা প্রয়োগ করতে পারবে না। এ জন্য আইন সংশোধন করে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর মধ্যে এই প্রভিশনটা রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য হলো জনগণকে নিরাপদ রাখা।