সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই কমছে না সংক্রমণ। বরং প্রতিদিন পরিস্থিতির অবনতিই হচ্ছে। এই অবস্থায় দিল্লিতে লকডাউনের (Lockdown) মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হল। শনিবার বিকেলে ঘোষণা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এর আগে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে এক সপ্তাহ লকডাউনের পথে হেঁটেছিল দিল্লি। এবার আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের মেয়াদ।
করোনা (Coronavirus) চিকিৎসায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন জোগাতে হাজারও ব্যবস্থা। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজধানী দিল্লিতে অক্সিজেনের হাহাকার। প্রতিদিন একাধিক করোনা রোগীর মৃত্যুতে সেই ছবি বারবার ফুটে উঠছে। শনিবার ফের সেই সংকট প্রকাশ্যে এল। বাত্রা হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে একে একে প্রাণবায়ু নিভল ১২ জনের, যার মধ্যে একজন চিকিৎসক। তিনি হাসপাতালেরই গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজির বিভাগীয় প্রধান। মৃত ১২ জনের মধ্যে ৬ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে ICU-তেই। অর্থাৎ এঁরা সকলেই সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে হয়ত করোনাকে কাবু করে এঁরা সকলেই ফিরতে পারতেন জীবনের পথে।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকের পুর নির্বাচনে বড় সাফল্য কংগ্রেসের, বিপর্যয়ের মুখে বিজেপি]
বাত্রা হাসপাতালের শীর্ষকর্তা সুধাংশু বাঙ্কাটা বিষয়টি স্বীকার করে অসহায়তার কথাই জানাচ্ছেন। তাঁর মতে, সংকটজনক রোগীর অবস্থা আরও অবনতি হয় যখন অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমতে থাকে। তখন বাঁচানো সম্ভব হয় না। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় অক্সিজেনের অভাব আরও প্রকট হবে বলে আশঙ্কা তাঁর। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, তা আগাম আঁচ করছেন তিনি। এই মুহূর্তে হাসপাতালের ২২০ জন রোগীকে দেওয়ার মতো অক্সিজেন সরবরাহ রয়েছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজির বিভাগীয় প্রধান ডাঃ আর কে হিমথানির মৃত্যু তাঁদের যেন বেশি করে ধাক্কা দিয়েছে। হিমথানি নিজেও আইসিইউ-তে করোনার সঙ্গে লড়াই করছিলেন।
[আরও পড়ুন: উধাও চালক, মধ্যপ্রদেশে পথের ধারে পরিত্যক্ত ট্রাকে মিলল প্রায় আড়াই লক্ষ টিকার ডোজ!]
অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে এই মুহূর্তে মামলা চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার জানিয়েছে যে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার মিলছে অনেক দেরিতে। ততক্ষণে কোনও সংকটজনক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। শনিবার এই সংক্রান্ত শুনানিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, তাঁরা বেলা ১১.৪৫এ অক্সিজেন ট্যাঙ্কার চেয়েছিলেন, কিন্তু তা হাসপাতালে পৌঁছেছে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় পর। টানা প্রায় ৮০ মিনিট অক্সিজেনহীন অবস্থায় রয়েছেন রোগীরা। মৃত এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, ”সকালে ৮টার সময়ে অক্সিজেন ফুরিয়েছিল। আমরা নিজেদের উদ্যোগে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে দিই। কিন্তু ওঁর ফুসফুস ততক্ষণে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। আমাদের এত চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি।” অবশ্য তিনি এও জানাচ্ছেন, দিল্লি সরকার করোনা চিকিৎসায় যথেষ্ট কাজ করছে। তবে পরিস্থিতির প্রতিকূলতায় ব্যর্থ হচ্ছে। এদিকে, অক্সিজেন সংকট কাটাতে দিল্লিতে ৩৪ টি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল।