সুমন করাতি, হুগলি: মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের। আর সেই মেশিনেই চলছে অন্তঃসত্ত্বাদের পরীক্ষা। হাসপাতালে দাঁড়িয়েই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর তা নিয়ে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে ব্যাপক শোরগোল।
রবিবার সকালে আচমকাই সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে পৌঁছন লকেট। হাতে কাগজপত্র। হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েই অভিযোগ করেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনে অন্তঃসত্ত্বাদের পরীক্ষা চলছে। বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদের অভিযোগ, গত সাত বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের। আর সেই মেশিনই এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে সিঙ্গুর ও হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে। সেই নথি হাতে নিয়ে সিঙ্গুর হাসপাতালে যান বিজেপি প্রার্থী। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলা হয়। এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন যে মেয়াদ উত্তীর্ণ, তা রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজনকে জানান।
[আরও পড়ুন: আচমকা ‘বেঁচে’ উঠল মৃত কিশোর! কাটোয়া হাসপাতালে ধুন্ধুমার]
এক মহিলা চিকিৎসককে লকেট বলেন, “আপনারা এতদিন ধরে যেটা করেছেন, যেটা সহ্য করেছেন, সেটা একজন মহিলা হিসাবে করা উচিত হয়নি। চাকরির জন্য আমরা নিজেদের বিবেক বেঁচে দিতে পারি না।” লকেটের প্রশ্নের মুখে পড়ে কার্যত বেসামাল দশা তাঁর। বলেন, “আমাদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত তো জেলা থেকে হয়।” লকেট পালটা বলেন, “আপনারা আমাকে কেন জানাননি? আমাকে জানানোর প্রয়োজন ছিল।” মেয়াদ উত্তীর্ণ আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ওই আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ২০২২ সালে তা রিন্যুয়ালের জন্য আবেদনপত্র পাঠান হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। সেই আবেদনপত্রে সিএমওএইচের সই আছে। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। আরও অভিযোগ, ওই হাসপাতালে টেকনিশিয়ান দিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানো হয়। যেখানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা চিকিৎসকের ইউএসজি করার কথা। লকেটের অভিযোগ, চিকিৎসা পরিষেবার জন্য সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। রোগী ও তাঁর পরিজনদের মধ্যেই আতঙ্ক তৈরি হয়।
এক কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্পিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “রিপোর্ট দেখে কোথাও কোনও খটকা লাগলে বাইরে থেকে আরও একবার ইউএসজি করে আনতে বলতাম। আমাদের কাছে কোনও তথ্য ছিল না, এই মেশিন ২০১৭ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবে আমাদের কিছু রিপোর্ট দেখে সমস্যা মনে হচ্ছিল। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। BMOH এবং CMOH-কেও জানিয়েছিলাম।” যদিও এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।