অরূপ কর: এবারের লোকসভা ভোটে নজরকাড়া কেন্দ্রগুলির তালিকায় অবশ্যই থাকবে যাদবপুর। বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী স্টার ইমেজ নিয়ে বিজেপি, সিপিএম প্রার্থীদের বিরাট ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হন ২০১৯-এর নির্বাচনে। এবার তিনি ভোটে নেই। যাদবপুরে রাজ্যের শাসকদল এবার যাঁকে টিকিট দিয়েছে, সেই সায়নী ঘোষও রুপোলি পর্দা থেকে রাজনীতিতে নেমে এখন ডাকাবুকো যুবনেত্রী।
তবে যাদবপুরের হাই প্রোফাইল কেন্দ্র হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ, এখান থেকেই ১৯৮৪-র লোকসভা ভোটে সিপিএমের দুঁদে আইনজীবী প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভোট রাজনীতিতে নামার সূচনা। তার আগে মমতা বেশ কয়েক বছর চুটিয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছেন, কিন্তু তাঁর পরিচিতি সীমাবদ্ধ ছিল তৎকালীন রাজ্য কংগ্রেসি রাজনীতির গন্ডির মধ্যে, তিনি ব্যাপক পরিচিতি পেলেন সেই নির্বাচনে ইন্দ্রপতন ঘটিয়ে। দেহরক্ষীদের গুলিতে ইন্দিরা গান্ধীর ঝাঁঝরা হওয়ার পর রাজীব গান্ধীর পক্ষে দেশব্যাপী তৈরি হওয়া প্রবল সহানুভূতির হাওয়ায় দাপুটে সিপিএম (CPIM) নেতা, পরবর্তীকালে লোকসভা স্পিকার সোমনাথবাবুকে হারিয়ে ‘জায়ান্ট কিলার’ তকমা পান মমতা। সেই শুরু। মমতার সেই জয়যাত্রা চূড়ান্ত রূপ পেল ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসানে রাজ্যে পালাবদলের মাধ্যমে। তবে সে এক ভিন্ন ইতিহাস।
[আরও পড়ুন: ‘মোদিতে হচ্ছে না, ঠাকরে চুরি করছে…’ রাজ-শাহ বৈঠকের পরই বিজেপিকে খোঁচা উদ্ধবের]
১৯৭৭, ১৯৮৪-র পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। কালের নিয়মে বদলেছে দেশ, রাজ্য রাজনীতির চেহারা। বাকি সব কেন্দ্রের মতো বদলেছে যাদবপুরও। বদলেছে কেন্দ্রের ভোটারের মনও। রাজনীতির ময়দানে পা রেখে ভোটারদের মন জয় করছেন এই জগতের বাইরের মুখরা। রাজনীতির লোককে হারিয়ে জিতছেন স্টার ইমেজধারীরা। কিন্তু ১৯৫২ সালে দেশের প্রথম লোকসভা ভোট থেকে শুরু করে ২০১৪-র নির্বাচন পর্যন্ত যাদবপুরের প্রার্থীদের কারও রঙিন বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যোগ ছিল না। ব্যতিক্রম হল ২০১৯-এ। জিতলেন মিমি। যাদবপুরের বাম দুর্গ পরিচয় ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। যে কেন্দ্রে বরাবর সোমনাথ চট্টেপাধ্যায়, কৃষ্ণা বসু, সুগত বসু, সুজন চক্রবর্তী, মালিনী ভট্রাচার্যের মতো রাজনীতি, অভিজাত অংশের কেউ নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে মিমির মতো তারকা প্রার্থীর জয় ব্যতিক্রমই বটে। বর্তমানে রাজ্যজুড়ে ঘাসফুলের দাপট। যাদবপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের ৬টিই তাদের দখলে। একটি মাত্র কেন্দ্র ভাঙড় আইএসএফের। বামেরা কোথাও নেই।
কিন্তু ছবিটা একসময় ছিল সম্পূর্ণ অন্য। বিধানসভা থেকে শুরু করে পুরসভা, তৃণমূল স্তরে গ্রাম প্রশাসন অর্থাত পঞ্চায়েত, পাড়া, স্কুল, কলেজ পরিচালন সমিতি, সর্বত্র ছিল সিপিএমের দাপট। পরপর ১৯৭৭, ১৯৮০-র লোকসভা ভোটে সোমনাথবাবুই (Somnath Chatterjee) জয়ী হয়েছিলেন। পেয়েছিলেন যথাক্রমে ৬৮.০১ শতাংশ ও ৫৯.৯৯ শতাংশ ভোট। ১৯৮৪ তে হারলেও তিনি পান ৪৭.৮৫ শতাংশ ভোট। কারণ তখনও রাইটার্সে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বাম সংগঠন ভাঙেনি। তাই পরের লোকসভা ভোটগুলিতে বামেরা হারানো কেন্দ্রটি পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছিল শক্তিশালী সংগঠন, ভোট মেশিনারি থাকায়। ১৯৮৯, ১৯৯১ এর লোকসভা ভোটে জয়ী হন সিপিএমের মালিনী ভট্টাচার্য। ২০০৪-এ জেতেন সুজন চক্রবর্তী। এমনকী ১৯৬৭ থেকে শুরু করে ২০১১-য় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরাজয়ের আগে পর্যন্ত যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি কোনওবার হাতছাড়া হয়নি সিপিএমের। ২০১৬-তেও বিপর্যয়ের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জেতেন সুজন চক্রবর্তী। যাদবপুরের বাম দুর্গ হয়ে ওঠা, পরপর ভোটে জেতার পিছনে ছিল তাদের একচ্ছত্র সংগঠন, মসৃণ ভোট মেশিনারি, যা ১৯৮৪-র নির্বাচন বাদ দিলে বেশিরভাগ ভোটেই মাত করেছে বিরোধীদের।
সেই দুর্ভেদ্য সংগঠন, ভোট মেশিনারি একদিনে তৈরি হয়নি। তিল তিল করে সিপিএম তা গড়ে তুলেছিল ১৯৭৭-এ ক্ষমতায় আসার পর। যদিও যাদবপুর বাম চেতনায় প্রভাবিত ছিল আগে থেকেই। টালিগগঞ্জ-যাদবপুরে ১৯৪৭-এর দেশবিভাজনের পর ওপার বাংলা থেকে ভিটেমাটি হারিয়ে কাতারে কাতারে আসা ছিন্নমূল উদ্বাস্তু কলোনিগুলিতে বাম ভাবনার একটা প্রেক্ষাপট ছিলই, ১৯৭৭-এ পালাবদলের সুবাদে সেখানে বামেরা প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সংগঠন জোরদার করে তোলে। উদ্বাস্তু পরিবারগুলির শিশু-কিশোররা যুবক বয়সে পার্টির হয়ে রাস্তায় নামতেন। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় তার চেহারা ছিল সর্বাত্মক, ফাঁকফোকরহীন। একচ্ছত্র, প্রশ্নাতীত আধিপত্য কায়েম করেছিল বামেরা। কলোনি কমিটি, স্কুল, কলেজ পরিচালন সমিতি, বাজার, ক্লাব কমিটি সবই ছিল তাদের দখলে। এলাকার সব ব্যাপারেই তাদের নিয়ন্ত্রণ। অবশ্য তার ভালো-মন্দ দুটি দিকই ছিল।
[আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও ১, এবার পুলিশের জালে জমির মালিক]
ভালো দিক, পাড়ায় কোনও বাড়িতে কেউ অসু্স্থ হলে খবর পেলেই দ্রুত ছুটে আসতেন পাড়ার স্থানীয় নেতা, লোকাল কমিটির নেতা-কর্মীরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সেই পরিবারের দূরের আত্মীয়স্বজনদের খবর দেওয়া-সব দায়িত্ব স্বেচ্ছায় নিজেদের কাঁধে তুলে নিতেন তাঁরা। সে সময় মোবাইল আমাদের কল্পনার অতীত, ল্যান্ডলাইন ফোনও থাকত মুষ্টিমেয় কিছু সম্পন্ন বাড়িতে। সেই পরিবারটি কৃতজ্ঞতার বন্ধনে বাঁধা পড়ত পার্টিকর্মীদের সঙ্গে, যার ফল মিলত ভোটবাক্সে। সেই নেতা, কর্মীদের জনসংযোগ ছিল দারুণ। বিপদে আপদে পাশে পাওয়া যেত তাঁদের। কাউন্সিলরকে হাতের কাছে পাওয়া যেত যে কোনও দরকারে। পাড়ায়, চায়ের দোকানে আড্ডায় বসতেন পার্টি কর্মীরা। নিয়ম করে মাসের কোনও রবিবার সকালে দুয়ারে হাজির হতেন ‘এলসি’র লোকজন। ২ টাকা, ৫ টাকা চাঁদার জন্য। তেমন কোনও জোরজবরদস্তি ছিল না। রশিদ দিতেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের জীবনযাপনে প্রকট অসঙ্গতি দেখা যেত না। সাধারণ মানুষের চোখে তাঁদের মোটের ওপর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ছিল। অন্ততঃ আটের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বামেদের ব্রিগেড সভার দিনকয়েক আগেই বাড়ি বাড়ি সিপিএম কর্মীরা বলে যেতেন, ৮-১০টা রুটি, গুড় রেডি করে রাখবেন, ব্রিগেডের জন্য লাগবে। ডিম-ভাত কালচার তখনও আসেনি। পরিবারের মা-মাসিমারা হাসিমুখেই সব আয়োজন করে রাখতেন।
কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পার্টির একপেশে দাপট দিনদিন সীমা ছাড়াতে শুরু করল একটা সময়। পারিবারিক ঝামেলা, স্বামী-স্ত্রীর বিবাদেও ঢুকে পড়ত পার্টির লোক, মহিলা সমিতির সদস্যরা। অনেক ক্ষেত্রেই ন্যয্য বিচার হত না। দলীয় মুখপত্র অনেক বাড়িতে বাধ্য হয়ে রাখতে হত। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও পক্ষপাতের অভিযোগ উঠতে শুরু করল। চাকরিতে অগ্রাধিকার পার্টিকর্মীদের। এ নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধা শুরু হয়। ধর্ম মানেন না যুক্তিতে পার্টিনেতারা সরাসরি পুজোপার্বনে না জড়ালেও পাড়ার শনি মন্দির কমিটিতে থাকতেন মহিলা সমিতির সদস্যরা। ক্রমশঃ তাঁরাই কমিটির সর্বেসর্বা হয়ে উঠতে শুরু করলেন।
সিপিএমের ভোট মেশিনারি, সংগঠন সম্পর্কে একটা কথা তখন বলা হত, পার্টির লোকজন একটা ভোটের ফল ঘোষণার দিন সন্ধ্যার পর থেকেই নাকি পরের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দেন। ভোটার তালিকা খুঁটিয়ে ধরে ধরে কোন বাড়িতে পার্টির কটা ভোট, কে এলাকায় থাকে না, পরের ভোটের জন্য কোন বাড়ির, কার নাম ভোটার তালিকায় তুলতে হবে, খুঁজে বের করে কী করতে হবে, সব আলোচনা হত। আর ভোট মেশিনারের আসল চেহারা দেখা যেত ভোটের দিন সকালে। কমিটেড ভোটারদের বাড়ি থেকে ডেকে বের করে বুথে নিয়ে যাওয়া, আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়া ভোটারকে অটোয় করে নিয়ে আসা সব করা হত নিখুঁত আয়োজনে। ভোট দিয়ে আসা পার্টি কর্মী, সমর্থককে নিজেদের ডেরায় নিয়ে গিয়ে আঙুলের কালি মুছিয়ে আবার ভোট দেওয়ানো, বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে গলার জোরে দাবিয়ে রাখা, বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টকে কোথাও কোথাও বের করে দেওয়া সবই চলত। এসব দেখে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরভুক্ত পরিবারগুলিও ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, তাঁদের মেনে নিতেন। এভাবেই অবক্ষয়ের শুরু আশির শেষ, নব্বইয়ের সূচনায়। এই সময়েই ধীরে ধীরে যাদবপুরের কলোনিগুলিও বদলাতে শুরু করে। এককালের প্রবীণরা কালের নিয়মে বিদায় নেন। সদ্য যৌবনে পা দেওয়া ছেলে বা মেয়েটির চোখে নতুন স্বপ্ন। কাজ চাই, কাজ। শিল্প কোথায়?
[আরও পড়ুন: শান্তনু গাঁজাখোর, ভোট দেবেন না! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ দলেরই বিধায়কের, ভাইরাল অডিও]
একটি-দুটি করে বাড়ি ভেঙে শুরু হল প্রোমোটিং। বাইরে থেকে এলেন ফ্ল্যাটবাড়ির নতুন বাসিন্দারা। কলোনির বন্ধনের সুতো দুর্বল হতে লাগল। বদল শুরু হল জনবিন্যাসে। পুরানো বাঙালি মুদি দোকানের পাশাপাশি দোকান খুলে জমিয়ে ব্যবসা শুরু করলেন অবাঙালিরা। সিপিএমের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রকাশ্যে আসতে থাকল। প্রোমোটার-ঘনিষ্ঠতা, কিছু কিছু নেতার অসংযমী, অনৈতিক জীবনযাত্রা, নেতৃত্ব নিয়ে গোষ্ঠীবিবাদ, কোথাও কোথাও নিজেদের মধ্যে মারামারি, সবই দেখল যাদবপুর। তাছাড়া, ১৯৯৬-এ জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার সুযোগ এলেও পার্টিনেতৃত্বের তা খারিজ করার সিদ্ধান্তও মানুষ ভালোভাবে নেননি। বাঙালি একজনকে প্রধানমন্ত্রী পদে পেল না, আমজনতার এই ক্ষোভের নিশানা হল নেতৃত্ব।
আর ততদিনে বাকি বাংলার মতো যাদবপুরের ভোটারও আগামীর নতুন মুখের আভাস পেয়ে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ২০০৬ এ সিঙ্গুর, পরে নন্দীগ্রামের ঘটনায় মমতার তীব্র আন্দোলনের ধাক্কা বাকি সব জায়গার মতো যাদবপুরেও বাম ভিতে ফাটল ধরায়। যাদবপুরের শহুরে, গ্রামীণ ভোটাররা বাম শিবির ছেড়ে ঘাসফুল বেছে নিতে শুরু করেন। তবু ২০১১-র পালাবদলের বিধানসভা ভোট পর্যন্ত বামেরা (Left Front) কিছুটা হলেও লড়াইয়ে ছিল। সেবার তারা যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পেয়েছিল ৩৫.৮ শতাংশ ভোট। ২০১৪-র লোকসভা ভোটেও বামের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩৬.৫ শতাংশ। কিন্তু সে বছরই কেন্দ্রে পালাবদলের পর থেকে লাগাতার বামেরা জমি হারাতে থাকে। টিএমসির পাশাপাশি বাড়তে থাকে বিজেপি। ২০০৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি যাদবপুরে পেয়েছিল মাত্র ২.৩ শতাংশ ভোট। তারপর থেকে বিধানসভা, লোকসভা নির্বাচনে ক্রমাগত শক্তিবৃদ্ধি হতে থাকে গেরুয়া দলের। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে তাদের ভোট বেড়ে হয় ২৭.৭ শতাংশ। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে হয় ২৮.৩ শতাংশ। ২০১৯-এ মিমি চক্রবর্তী প্রার্থী হওয়ায় অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন, কিন্তু বিজেপির অনুপম হাজরা, সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতো প্রার্থীকে হারিয়ে তাঁদের ভুল প্রমাণ করেন রাজনীতিতে নবাগত অভিনেত্রী। তিনি পান ৪৭.৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি, সিপিএম প্রার্থীরা অনেক পিছনে। যথাক্রমে ২৭.৩৬ ও ২১.০৩ শতাংশ।
গত ৫ বছরে পরিস্থিতি বদলেছে অনেকটা। শিক্ষা নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি, রেশন সামগ্রী দুর্নীতি-সহ নানা ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতি আলোড়িত, ২০১৯-এ যেগুলি ছিল না। মন্ত্রীরা জেলে। চালু হয়ে গিয়েছে সিএএ, যা সংখ্যালঘু-সহ নানা মহলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে, এই ভাবনায় অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে যাদবপুরেও কঠিন লড়াই হবে। টিএমসি প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সায়নী। প্রতিটি বাড়ি যাচ্ছেন। টেলি-সিনে দুনিয়া থেকে এলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী কিন্তু গত কয়েক বছরে পুরোপুরি রাজনীতির লোক হয়ে উঠেছেন। তাঁর প্রচারের মূল হাতিয়ার অবশ্যই মমতার নানা জনপ্রিয়, জনমুখী সামাজিক প্রকল্প, যা যাদবপুর কেন্দ্রের গ্রাম-শহরে টিএমসির সমর্থনের মূল ভিত। বিরোধী বাম প্রার্থী ছাত্রনেতা সৃজন ভট্টাচার্য নতুন, স্বচ্ছ মুখ। বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলি শ্যামাপ্রসাদ রিসার্চ ফাউন্ডেশন কর্ণধার। শহুরে, ডানপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলে তাঁর ভাল পরিচিতি আছে। সুতরাং লড়াইটা হবে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক। ভোট দেওয়ার সময় সায়নীর বিনোদন জগতের ইমেজ ভোটাররা বিচার করবেন বলে মনে হয় না। তাঁরা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির তুল্যমূল্য বিচার করে, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ভোট দেবেন।