গোবিন্দ রায়: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কুকথা বলার অভিযোগে তাঁকে সেন্সর করেছে নির্বাচন কমিশন। শোনানো হয়েছে কড়া কথাও। প্রতিবাদে এবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা জারির সময় কমিশন যে মন্তব্যগুলি করেছে সেগুলি তাঁর পক্ষে অবমাননাকর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ‘কুকথা’ বলার জেরে তমলুকের বিজেপি প্রার্থীকে ‘সেন্সর’ করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ বুধবার বিকাল ৫টায়। একই সঙ্গে চার পাতার চিঠিতে প্রাক্তন বিচারপতিকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে কমিশনের তরফে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে কমিশন লিখেছিল, "পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যেখানে মহিলাদের সম্মান করার স্বতন্ত্র ঐতিহ্য রয়েছে, সেখানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যবহৃত শব্দ বাংলার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে, ভাবমূর্তিরও ক্ষতি করেছে।"
[আরও পড়ুন: ‘যত অত্যাচার করবেন, দলে ততই বাড়বে শুভেন্দুর গুরুত্ব’, পুলিশি হানা নিয়ে তৃণমূলকে শাহী চ্যালেঞ্জ]
কমিশনের নোটিস হাতে পাওয়ার পরই অভিজিৎ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। চার পাতার চিঠিতে যে মন্তব্য করা হয়েছে সেই মন্তব্যকে অবমাননাকর বলে মনে করছেন প্রাক্তন বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য ছিল, “অন্য লোকের মান আছে। রেখা পাত্রের মান নেই, আমার মান নেই, তা তো হতে পারে না!” বুধবার হাই কোর্টে গিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করে এসেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে ‘রেমাল’, ষষ্ঠ দফা ভোটে ঝড় সামলাতে কী পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের?]
উল্লেখ্য, গত ১৫ মে প্রচারে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অভিজিৎ বলেছিলেন, “রেখা পাত্র গরিব মানুষ লোকের বাড়িতে কাজ করে খায়, আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন, একটু বেশি সুন্দরী। সেই জন্য রেখা পাত্রকে ২ হাজার টাকায় কেনা যায়। একজন মহিলা আরেক জন মহিলা সম্পর্কে কী করে এই উক্তি করতে পারেন আমরা ভাবতেও পারি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা তো! আমার মনে প্রশ্ন জাগে মাঝে মাঝে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে তো ৮ লাখ টাকা গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে ১০ লাখ টাকা গুঁজে দেয় এবং দিয়ে রেশন হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতবর্ষেই থাকে না সেই রেশন। তো তোমার দাম ১০ লাখ টাকা কেন?” অভিজিতের মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পরদিনই তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিতে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল শাসকদল। সেই দাবি মেনে তমলুকের বিজেপি প্রার্থীকে ২৪ ঘণ্টার জন্য সেন্সর করেছে কমিশন।