shono
Advertisement

লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০০ করার পরিকল্পনা BJP সরকারের! নেপথ্যে কোন সমীকরণ?

আসনসংখ্যা বাড়লে সুবিধা পাবে বিজেপি, আশঙ্কা বিরোধী শিবিরের।
Posted: 03:18 PM Aug 01, 2021Updated: 03:28 PM Aug 01, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (CoronaVirus) অতিমারীর মধ্যেই সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প শেষ করার তাড়াহুড়ো কি আসলে সংসদে জায়গা বাড়ানোর লক্ষ্যে? ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই সংসদের নিম্নকক্ষের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে চায় গেরুয়া শিবির? সম্প্রতি এই জল্পনা উসকে দিয়েছেন Congress নেতা মণীশ তিওয়ারি। সপ্তাহখানেক আগে কংগ্রেস নেতার করা একটি টুইট জাতীয় রাজনীতিতে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। টুইটে মণীশ দাবি করেছিলেন, ‘‌বিজেপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে আমি জানতে পেরেছি, ২০২৪ সালের ভোটের আগে লোকসভার সদস্য সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই নতুন সংসদ ভবন এক হাজারের বেশি আসন নিয়ে তৈরি হচ্ছে। যদি সত্যিই তাই হয়, তবে এটা করার আগে জনগণের মতামত নেওয়া খুবই জরুরি।’‌ মণীশের এই টুইটেই যেন বিরোধী শিবিরে আশঙ্কার চোরাস্রোত বয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু কেন এই আশঙ্কা? সেটা জানার আগে, বুঝে নেওয়া যাক লোকসভার আসন সংখ্যা বৃদ্ধি কি আদৌ সম্ভব? সম্ভব হলে কীভাবে? বস্তুত, লোকসভার আসন সংখ্যা বৃদ্ধি নতুন কিছু নয়। এর আগেও বার দু’য়েক সংসদের নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যা বেড়েছে। আসলে সংবিধানের ৮১ নম্বর ধারা অনুযায়ী লোকসভার আসন সংখ্যা ঠিক করা হয়। এবং এটা ঠিক হয় দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে। তাই লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়াতে সংবিধানের ৮১ ধারা সংশোধন করতে হবে। শেষবার ১৯৭৩ সালে লোকসভার (Lok Sabha) আসনসংখ্যা বেড়েছিল। ১৯৭১ সালের জনগণনার পর ১৯৭৩ সালে লোকসভার আসন সংখ্যা ৫০২ থেকে বাড়িয়ে ৫৪৫ করা হয়। তারপর থেকে প্রায় ৫ দশক এই আসন সংখ্যায় কোনও বদল আনা হয়নি। প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন একবার লোকসভার আসনসংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তাঁর মত ছিল, জনসংখ্যা যে হারে বেড়েছে, তাঁর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনপ্রতিনিধি সংখ্যাও বাড়ানো দরকার।

বস্তুত, ১৯৭১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে ঠিক করা আসন সংখ্যা অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না। কিন্তু আসনসংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও বাধা রয়েছে। সংবিধানের ৮১ নম্বর ধারা অনুযায়ী আপাতত ২০২৬ পর্যন্ত আসনসংখ্যা বাড়ানো যাবে না। যদিও, সংসদে সংখ্যার বলে গেরুয়া শিবির সেই ধারা সংশোধন করতেই পারে। কিন্তু আরেকটা মুশকিল হল, লোকসভার আসনসংখ্যা বাড়ে জনসংখ্যার ভিত্তিতে। তাই আসন বাড়ানোর জন্য আগে জনগণনা হওয়া জরুরি। এবছরই এপ্রিল মাস থেকে দেশজুড়ে জনগণনার কাজ শুরুর কথা ছিল। করোনার জেরে সেটা এখনও করা হয়ে ওঠেনি। এখন ২৪-এর আগে জনগণনা সেরে লোকসভার সীমানা পুনর্বিন্যাস করাটা খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ হবে।

[আরও পড়ুন: নজরে সংগঠন, সোমবারই ত্রিপুরার কঠিন মাঠে ‘খেলা’ শুরু অভিষেকের]

এবার আসা যাক বিরোধীদের আশঙ্কার কথায়। কংগ্রেস তথা অন্য বিরোধীদের আশঙ্কার মূল জায়গা হল, ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজেদের সুবিধামতো আসন পুনর্বিন্যাস করে নেবে বিজেপি। আসলে জনসংখ্যার ভিত্তিতে যদি নতুন আসন বণ্টন করা হয় তাহলে দক্ষিণ ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে আসন সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। বিশেষ করে বিহার, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মতো রাজ্য যেখানে কিনা বিজেপি অত্যন্ত শক্তিশালী, সেখানে অনেক বাড়বে আসনসংখ্যা। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরলের (Kerala) মতো রাজ্যের তুলনায় আসন সংখ্যা বেড়ে যাবে। কারণ, এই রাজ্যগুলির জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার দীর্ঘদিন ধরেই গোবলয়ের রাজ্যগুলির তুলনায় কম। লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে ফলে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যাও অনেকটাই মিটবে। কারণ, সেক্ষেত্রে অনেক বেশি নেতাকে লোকসভার টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement