সুব্রত বিশ্বাস: রবিবার থেকে ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যে ‘প্রায় লকডাউন’ ঘোষণার পরই ট্রেনের টিকিট বাতিল করতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। এই অবস্থায় বিপদের মুখে রেল কর্তৃপক্ষও। এমনিতেই আগের থেকে বহু ট্রেনে যাত্রী কম হওয়ায় সেগুলিকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বাতিল করে দিয়েছে রেল। এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হল। হাওড়ার ডিআরএম সুমিত নারুলা বলেন, “আগে বহু ট্রেনে কুড়ি শতাংশ যাত্রী হচ্ছিল না। যাত্রী কমার ফলে অনেক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যে ফের লকডাউনের মতো পরিস্থিতি হওয়ায় চলাচলকারী ট্রেনগুলির টিকিট বাতিল হতে শুরু করেছে। এই ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কমে দশ শতাংশের নিচে গেলে সেই ট্রেন স্বাভাবিকভাবে বাতিল করা হবে।”
আন্তঃরাজ্য ট্রেনগুলিকে বাতিল করবে রেল। ইন্টারসিটি স্তরে যাত্রী কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যে বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এবার যেগুলি চলছে তা বাতিল হবে বলে শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং জানান। তিনি আরও বলেন, রেলকর্মীদের জন্য যে স্পেশ্যাল ট্রেন চলছে তারও অনেকগুলি এই পরিস্থিতিতে বাতিল করবে রেল। দূরপাল্লার মেল-এক্সপ্রেস আপাতত বাতিল না হলেও পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ। রাজ্যে ‘প্রায় লকডাউন’ ঘোষণার পর ট্রেন চলাচলের পরিস্থিতি নিয়ে ভারচুয়াল সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে রেল।
[আরও পড়ুন: জুনে হচ্ছে না মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক, জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব]
এদিন দুপুরে রাজ্যের তরফে লকডাউন ঘোষণার পর রাতের দিকের ট্রেনগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের কেউ-কেউ ঘরে ফেরার জন্য হাওড়া, শিয়ালদহে এলেও তা খুব একটা বড় সংখ্যার নয়। কমার্শিয়াল বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, টিকিট কাটলেও সংরক্ষিত টিকিটের চাহিদা বিশেষ দেখা যায়নি। ফলে সব ট্রেনেরই আসন রয়েছে পর্যাপ্ত। রবিবার সকাল থেকে এই লকডাউন ঘোষণার পর ট্রেনগুলি ধরতে যেতে যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হবে বলে তাঁরা মনে করেছেন। প্রয়োজনে ট্যাক্সি চললেও তা যে হারে যাত্রীদের পকেট কাটবে তাতে চরম বিপদের মধ্যে পড়তে হতে পারে বলে তাঁদের অনেকেই মনে করেছেন। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে এই সমস্যার মধ্যে যাতে যাত্রীদের পড়তে না হয়, সেজন্য পুলিশি নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। রেলকর্মীদের জন্য ট্রেন চললেও তার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে রবিবার থেকে। শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং বলেন, শুধু ট্রেনেই আসেন না রেলকর্মীরা। বহু কর্মী সড়কপথেই আসেন কর্মস্থলে। ফলে তারা চরম বিপদে পড়বেন। চালক ও গার্ড কম হাজিরা হবেন এই আশঙ্কায় স্পেশ্যাল ট্রেনও কমিয়ে দেওয়া হবে। শনিবার দুপুরে লকডাউন ঘোষণার পর পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে রেল। যা নিয়ে আলোচনা মারফত সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন রেলকর্তারা।