রমনী বিশ্বাস, তেহট্ট: এ যেন মাছের মড়ক! জলঙ্গী নদীর বুকে ভেসে উঠছে প্রচুর ছোট-বড় মরা মাছ। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছের মৃত্যু এবং জলে দুর্গন্ধের জেরে চিন্তায় পড়েছে মৎস্যজীবী থেকে আমজনতা। তেহট্টের বিভিন্ন এলাকায় উঠে এল এমনই চিত্র। নদীতে অত্যাধিক জলদূষণের কারণেই এই মাছ মড়ক বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। শুধু তাই নয়, জলঙ্গী নদীর জল দিয়ে বের হচ্ছে পচা দুর্গন্ধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট, হাঁসপুকুরিয়া, তারানগর, নিশ্চিন্তপুর-সহ একাধিক এলাকায় মাছ মরার খবর পাওয়া গিয়েছে। মাছের মধ্যে ফলুই, ট্যাংরা, পুঁটি, বাটা, কাতলার মতো বড় মাছেরও মৃত্যু হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদেরও অসচেতনতা ধরা পরেছে। হাঁসপুকুরিয়া এলাকায় বেশ কিছু ব্যক্তি জানিয়েছেন, নদীর এই অবস্থা দেখে বাইরে থেকে বহু মৎস্যজীবীরা এসে নদীতে মাছ ভেসে ওঠার কোনও ট্যাবলেট ফেলেছিল। এতে করেও বহু মাছ মারা গেছে বলেও অভিযোগ। কোনও সদর্থক ভূমিকা নিতে যায়নি মৎস্য বিভাগ, সেচ বিভাগ বা প্রশাসনকে। আর এর জন্য একদিকে যেমন নদীর স্বাস্থ্য হানি হচ্ছে, তেমন ভাবে মাছেরও ক্ষতি হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: এবার ‘চন্দ্রমুখী’র চরিত্রে ভয় দেখাবেন কঙ্গনা, প্রকাশ্যে ‘দুর্ধর্ষ’ লুক, দেখুন]
নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলাকে বিভক্ত করেছে এই জলঙ্গী নদী। এই জলঙ্গী নদীর উপরেই নির্ভর করে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী পরিবার। নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। জমিতে সেচের ব্যবস্থা চলে এই নদীর জল থেকে। তবে সদ্য দেখা যাচ্ছে জলঙ্গী নদীতে একের পর এক মারা যাচ্ছে মাছ মরে ভেসে উঠছে নদীর জলে। এলাকার বরুণ সিনহা, নিউটন বিশ্বাসদের অভিযোগ, এবছর তেহট্ট মহকুমার সমস্ত এলাকায় অনাবৃষ্টির কারণে খাল, বিল ও পুকুরগুলিতে জল নেই। ফলে নদীতেই পাট পচাতে জাঁক দিচ্ছেন চাষিরা। এছাড়াও জলঙ্গী নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে দূষিত জল নামছে নদীতে, যার কারণে ঘটছে জলদূষণ। আর এই জল দূষণ থেকেই একের পর এক মাছ মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ অনেকেরই।
এই বিষয় তেহট্ট ১ বিডিও শুভাশিস মজুমদার জানিয়েছেন, জলঙ্গি নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ এই দুটো জেলা নিয়ে। এটা বড় সমস্যা, অনেক কিছু জড়িয়ে আছে এর মধ্যে। একজন বিডিওর উদ্যোগে এটা সমাধান করা মুশকিল। আমরাই এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, রাজ্যেও জানানো আছে। এটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।