সুব্রত বিশ্বাস: ‘বুকিং’ নয়, কোড নম্বরেই শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করে বুকিংহীন পণ্য। ভোরের ট্রেনগুলিতে শহরতলি থেকে কলকাতার কোলে মার্কেট-সহ শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে যে সব সবজি আসে তার সবটাই বুকিংহীন। রেলের আয় হয় না. কিন্তু টিটিরা নিজেদের ভাগটা ঠিকই বুঝে নেন. অন্তত তেমনই দাবি যাত্রীদের. রেলমন্ত্রীর টুইটে নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি লোকাল, এমনকী দূরপাল্লা ট্রেনের সাধারণ কামরায় এই সব বুকিংহীন পণ্য তোলায় চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। শৌচালয়েও ঢুকিয়ে রাখা হয় বুকিংহীন পণ্য।
[বিদেশি উপহারের টোপ, মহিলাকে ১৮ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪]
ভোরে দক্ষিণ শাখার ট্রেনগুলিতে বড় বড় বাজরায় টন টন সবজি আসে শিয়ালদহ স্টেশনে। কোড নম্বর টিটি বল দিলেই হল! বুকিং ছাড়া ট্রেন ফেলা যায় পণ্য। এই সব বুকিংহীন পণ্য থেকে আবার এক শ্রেণির বহিরাগতরা টাকা সংগ্রহ করে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বুকিংহীন পণ্য থেকে টাকা তোলে জনৈক খালেদ ও ফরিদ নামে দুই ব্যক্তি। বুকিংহীন পণ্যের কোড নম্বর বলে দেয় এরাই। আর সেই কোড নম্বর বলেই সবজি নিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র পায় কুলিরা। বেলা ১০.৪০ মিনিটের বনগাঁ লোকালের পিছনের ভেণ্ডারে জনৈক মানিক ও গুপ্ত থাকে পারসিয়ারের দায়িত্বে। এরাই টাকা সংগ্রহ করতে করতে শিয়ালদহে আসে। এক একটি বাজরা থেকে দেড়শো টাকা করে তোলে এই পারসিয়াররা। স্টেশন থেকে বেরিয়ে কোলে মার্কেটে চলে যায় সবজির ঠেলা। সেই ঠেলা থেকে তোলা আদায় করতে পারসিয়াররা পৌঁছে যায় সেই মার্কেটে। যাত্রীদের দৃষ্টি এড়াতে এভাবেই বাইরে টাকা তোলার পদ্ধতি রয়েছে। রোজই এই বিপুল পরিমাণ সংগৃহীত টাকা ভাগ হয় বেশ কয়েকটি ভাগে। এক শ্রেণির টিকিট পরীক্ষক থেকে পুলিশের পকেটে যায় এই টাকা। তবে রেলের এই বাবদ ক্ষতি ১০০ শতাংশ। কমার্শিয়াল বিভাগের কর্তারা এই ধরনের বুকিংহীনভাবে পণ্য যাতায়াতের জন্য রেলের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের কথায়, স্বল্প দূরত্বে পণ্য বুকিং ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় এভাবে বুকিংহীন পণ্য যাতায়াত করে। বুকিংহীন পণে্য জরিমানা ছ’গুণ হওয়ায় সবজি ব্যবসায়ীরা সাধারণত এই পথ এড়াতেই গোপন যোগাযোগ গড়ে তোলে। এই রফাসূত্রেই অপরাধের পরিমাণ বাড়ছে বলে তঁারা মনে করেছেন।
[ গলায় খাবার আটকে গিয়েছে? প্রাণ বাঁচাতে ব্রহ্মাস্ত্র হোক ‘হেমলিক প্রকৌশল’]