সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার নিলামে উঠছে শেখ হাসিনা সরকারের সাংসদ-মন্ত্রীদের বিলাসবহুল গাড়ি! ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন মুজিবকন্যা হাসিনা। দেশ ছেড়ে এখন তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে গিয়েছেন। নানা মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছেন অনেকে।
এবার খবর প্রাক্তন হাসিনা সরকারের সাংসদ ও মন্ত্রীরা বিনা শুল্কে বিদেশ থেকে ৫২টি গাড়ি আনেন। কিন্তু সরকার পতনের পর সেই সব গাড়ি আর বন্দর থেকে ফেরত নেননি তাঁরা। বিলাসবহুল গাড়িগুলো বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে আছে। সেই গাড়িগুলোর মধ্যে ১৮টির নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য গত বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম কাস্টমের নিলাম শাখায় নথিপত্র পাঠিয়েছে। তবে কবে নিলামে ওঠানো হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানাতে পারেনি কাস্টম কর্তৃপক্ষ। হিসাব থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর, খুলনার মোংলাবন্দর ও কমলাপুর রেলওয়ের আইসিডি দিয়ে প্রাক্তন সাংসদ ও মন্ত্রীরা ৫২টি গাড়ি আমদানি করেন। গত ৫ আগস্টের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় ৫২টি গাড়ি আটকে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, ৫২টি গাড়ির মধ্যে বেশির ভাগেরই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, রেঞ্জ রোভার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ৩৩৪৬ সিসির এই গাড়িটির স্বাভাবিক শুল্ক ৮২৬.৬ শতাংশ। আমদানি করা এসব গাড়ির বেশির ভাগই অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে। আমদানির পর ইয়ার্ডে রাখার নির্ধারিত সময়সীমা ৩০ দিনের বেশি অতিবাহিত হওয়ায় নিলামে বিক্রির জন্য গাড়িগুলো কাস্টমের কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মহম্মদ ওমর ফারুক বলেন, "বন্দরে আসার পর ৩০ দিন পার হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামের জন্য কাগজপত্র কাস্টমস হাউসে পাঠানো হয়েছে। এখন কাস্টম ব্যবস্থা নেবে। কারণ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। এসব গাড়ি যত দ্রুত নিলামে বিক্রি হবে আমাদের জন্য মঙ্গল। ইয়ার্ড খালি হলে সেখানে নতুন কনটেইনার রাখা যাবে।"
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট গদিচ্যুত হন হাসিনা। তার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন তৎকালীন হাসিনা সরকারের বহু হেভিওয়েট মন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশে হামলা ও অত্যাচারের শিকার হন আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা। শুধুমাত্র হাসিনাপন্থী হওয়ার কারণে বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। ফলে বাংলাদেশে কার্যত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে হাসিনার দল। এর মাঝেই বুধবার সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় ছাত্র লিগকে নিষিদ্ধ করে দেয় ইউনুস সরকার।