সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন।' তার মধ্যেই বেজে উঠেছে দেবী দুর্গার আগমন ধ্বনি। দূরে ইউক্রেন-রাশিয়া, ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন-ইরান যুদ্ধ। বাড়ির কাছের আরশিনগরও ভালো নেই। সমাজে নারীর নিরাপত্তা, স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই কঠিন সময়ে নারীশক্তির আরাধনার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। ২ অক্টোবর মহালয়া, দেবীপক্ষের শুরু। ৯ থেকে ১১ অক্টোবর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের বচ্ছরকার চারদিন। এখন প্রশ্ন হল, এবার দেবীর আগমন ও গমন কোন বাহনে? কী হবে তার পরিণাম?
দুর্গার আগমন ও প্রস্থানের বাহন ও তার ফলাফল নিয়ে বাঙালি সমাজে বহু লোককথা প্রচলিত। এই বিষয়ে রীতিমতো চিন্তিত থাকেন ভক্তেরা। কারণ হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, দুর্গার আগমন ও গমনের বাহনের উপরে নির্ভর করে মর্তলোকে সারা বছর কেমন কাটবে। আশঙ্কার কথা হল, প্রতি বছর দুর্গার আগমন ও গমনের বাহন বদলে বদলে যায়। কোন বছর কোন বাহনে আসা-যাওয়া দেবীর, কীভাবে নির্ধারণ হয়?
হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, সপ্তমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে গজ বা হাতি। সপ্তমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবীর বাহন ঘোটক বা ঘোড়া। সপ্তমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর বাহন দোলা বা পালকি। সপ্তমী বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা। একই ভাবে, দশমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর প্রস্থান বাহন হবে গজ। দশমী শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবী বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। দশমী বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর গমন হবে দোলা বা পালকিতে। আর দশমী বুধবার হলে দেবীর নৌকায় করে কৈলাশে ফিরবেন। এবার দেবীর আগমন ও গমন কোন বাহনে?
যেহেতু ১০ অক্টোবর সপ্তমী পড়েছে বৃহস্পতিবার, তাই শাস্ত্র অনুযায়ী এবার আগমন দোলা বা পালকিতে। অন্যদিকে ১২ অক্টোবর শনিবার পড়েছে বিজয়া দশমী। সেই কারণে পুত্র-কন্যা নিয়ে কৈলাশে ঘোড়া বা ঘোটকের পিঠে আসীন হয়ে ফিরে যাবেন দেবী। এর ফল কী হবে? শাস্ত্রমতে দুর্গা যদি পালকিতে করে আসেন, তাহলে ফল "দোলায়াং মকরং ভবেৎ" অর্থাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ ও অতিমৃত্যু। দেবী যদি ঘোড়ায় চড়ে আসেন বা বিদায় নেন তবে তার ফল "ছত্র ভঙ্গ স্তুরঙ্গমে" অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে যুদ্ধ হয়। অর্থাৎ আগমন ও গমন দুইয়ের ফলই মন্দ।
উল্লেখ্য, দেবীর গমন ও আগমন সবচেয়ে ভালো গজ বা হাতিতে। শাস্ত্র মতে যা দেবীর উৎকৃষ্টতম বাহন। দেবীর বাহন হাতি হলে মর্ত্যলোক ভরে ওঠে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধিতে।দেবীর আসা বা যাওয়া নৌকায় হলে "শস্য বুদ্ধিস্তথাজলম" অর্থাৎ এর ফলে ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও থাকে।