দীপঙ্কর মণ্ডল: আগের মতই আগামী বছরের মাধ্যমিক (Madhyamik )–উচ্চমাধ্যমিক (HS) পরীক্ষা খাতা–কলমেই নেওয়া হতে পারে। সিবিএসই দু’দফায় অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণার পর সেই পথে এগোচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। প্রস্তাব যাচ্ছে স্কুলশিক্ষা দপ্তরে। কর্তারা অফিসিয়ালি মুখ খুলতে না চাইলেও জানিয়েছেন, সরকারি সিলমোহর মিললে আগের মতই ফের খাতায় কলমে পরীক্ষা হবে। তবে কোভিড উত্তর সময়ে সিবিএসইর ধাঁচে দু’দফায় রাজ্যের দুই মেগা পরীক্ষা হতে পারে।
স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “গত বছর মার্চ মাস থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের কোনও ক্লাসের পরীক্ষাই হয়নি। আগামী বছরও এই অবস্থা জারি থাকলে মূল্যায়ন কীভাবে হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সব মহল। সিবিএসই দশম এবং দ্বাদশ–এর পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে দিয়েছে। আইসিএসই বোর্ডও ঘোষণা করেছে তারা বছরে দু’টি সেমেস্টারের মাধ্যমে পরীক্ষা নেবে। দু’টি দিল্লি বোর্ডের তুলনায় এ রাজ্যে বেশ কয়েকগুন বেশি পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিকে বসে। সংসদ সূত্রে খবর, পরীক্ষা পদ্ধতির প্রস্তাবের খসড়া যাবে স্কুলশিক্ষা দপ্তরে। দপ্তর হয়ে নবান্নের সায় মিললে তা ঘোষণা হবে।”
[আরও পড়ুন: উৎসব মিটতেই করোনা পরীক্ষায় জোর, চলতি বছরই রাজ্যে প্রথম ডোজ টিকাকরণ শেষ করার নির্দেশ]
মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে চলতি বছরে প্রায় কুড়ি লক্ষ ছাত্রছাত্রী করোনার উৎপাতে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। তবে প্রত্যেকেই মার্কশিট পেয়েছে। মূল্যায়নে প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল পুরনো ক্লাসের সাফল্য। এবারও পরীক্ষা না হলে আগের ক্লাসের সাফল্যের হদিশ মিলবে না। কারণ চলতি বছরে কোনও পরীক্ষাই হয়নি। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পর্ষদ এবং সংসদ এই কারণে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি মিললে চূড়াম্ত ঘোষণা করবে বিকাশ ভবন। মাধ্যমিকের মার্কশিট তৈরি হয়েছিল নবম শ্রেণিতে পাওয়া নম্বরের অর্ধেক ও দশমে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে পাওয়া নম্বরের পাঁচগুন যোগ করে। উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়নে জোর দেওয়া হয় মাধ্যমিক ও একাদশে প্রাপ্ত নম্বরের উপর। কিন্তু চলতি বছরে কোনও পরীক্ষাই হয়নি। এরফলে ২০২২ সালের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার সময় সমাধানের কোনও পথ পাননি পর্ষদ ও সংসদের কর্তারা।
[আরও পড়ুন: আর বেসরকারি সংস্থা নয়, স্টেশনের উন্নয়নের দায়িত্ব ফিরছে রেলের হাতে]
চলতি বছরে করোনার কোপে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক দুটো পরীক্ষাই হয়নি। আগের ক্লাসে পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে মার্কশিট পাঠানো হয়েছে। প্রশ্নপত্র ছাপা, রাজ্যের জেলায় জেলায় তা বিলির জন্য গাড়ি, উত্তরপত্র বিলি, খাতা দেখার জন্য শিক্ষকদের সাম্মানিক, পরীক্ষকদের ভাতা ইত্যাদি খাতে কোনও খরচ হয়নি। তবু চলতি বছরের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের কাছ থেকে পরীক্ষা ফি নিয়েছে পর্ষদ এবং সংসদ। আগামী বছরের দুই মেগা পরীক্ষার ফি নেওয়া শুরু হয়েছে। পর্ষদ একটি নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে। স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নয়া অ্যাকাউন্টেই পাঠাতে হবে পরীক্ষা ফি বাবদ আদায় করা টাকা। প্রধানশিক্ষকদের সংগঠনের তরফে চন্দন মাইতি ফি–এর টাকা ফেরতের দাবি তুলেছিলেন। করোনার প্রকোপও ক্রমশ কমছে। সবদিক খতিয়ে দেখে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব জমা পড়তে চলেছে।