সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির তথাকথিত খারাপ ফলের অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করা হয় আরএসএসের নিস্ক্রিয়তাকে। শোনা যায়, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে সংঘ পরিবার লোকসভায় বিজেপিকে জেতাতে সেভাবে সক্রিয়তা দেখায়নি। তবে সেই শৈত্য এখন অতীত। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা এবং উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে কোমর বেঁধে আসরে নেমে পড়েছে আরএসএস। সংঘ কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছেন। মূলত হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করে বিজেপির পক্ষে আনাই সংঘের লক্ষ্য।
লোকসভার আগে বিবাদ যে হয়েছিল, সেটা পরে স্বীকারও করে নেয় আরএসএস। কিন্তু মহারাষ্ট্রের ভোটের আগে সেই বিবাদকে পিছনে ফেলে বিজেপির সমর্থনে এগিয়ে আসতে চাইছে সংঘ পরিবারও। এর আগে হরিয়ানাতেও নীরবে কাজ করে গিয়েছে সংঘ। যার সুফল পেয়েছে গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, আরএসএসের তরফে স্বয়ংসেবকদের বার্তা দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে দিনরাত কাজ করে হলেও মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে জেতাতে হবে। ভোটের আগে যে কদিন সময় আছে ‘ওভারটাইম’ কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংঘ কর্মীদের। সূত্রের খবর, সংঘ হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করতে 'সজাগ রহো' বলে একটি কর্মসূচি নিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের 'কাটেঙ্গে তো বাটেঙ্গে', প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়' স্লোগান প্রতিটি হিন্দু পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতেই এই 'সজাগ রহো' কর্মসূচি। মূলত মহারাষ্ট্রে এই কাজ শুরু হয়েছে। আরএসএস প্রায় ৬৫টি সহযোগী সংগঠনকে আসরে নামিয়ে দিয়েছে শুধু হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজে। এই বিশাল কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য একটাই, যে কোনও মূল্যে বিজেপি জোটকে ভোটে জেতানো। মূলত, দলিত এবং ওবিসি ভোটারদের টার্গেট করে এই কর্মসূচিগুলি নেওয়া হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে হিন্দু ঐক্যে। আসলে লোকসভায় বিজেপির দলিত ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছিল কংগ্রেস। সেটা রুখে দিতে চাইছে আরএসএস।
এই কর্মসূচিগুলি মূলত মহারাষ্ট্রকে টার্গেট করে শুরু হলেও ঝাড়খণ্ডেও একইভাবে কার্যকর করার চেষ্টা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনেও কোমর বেঁধে নেমেছে সংঘ। ঝাড়খণ্ডের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক সংঘ নেতৃত্বের। আসলে সংঘ মনে করছে, লোকসভার ধাক্কার পর মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ডেও বিজেপি না জিতলে দেশজুড়ে নেতিবাচক বার্তা যাবে। সেটা সংঘের জন্যও সুখবর হবে না। তাছাড়া সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হিন্দু ঐক্যের গুরুত্ব বোঝাতেও বিজেপির জয় প্রয়োজন বলে মনে করছে সংঘ।