সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারী নির্যাতন এদেশে ক্রমেই এক মহামারীর আকার নিচ্ছে। কিন্তু কেবল অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়াই কি এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ? নির্যাতিতাকে স্বাভাবিক, সুস্থ জীবনে ফেরাতে তাঁর প্রতি সমাজের সহানুভূতিও প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি যে একেবারেই আলাদা তা আবারও প্রমাণিত হল মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) এক গণধর্ষিতা যুবতীর অত্যাচারিত হওয়ার ঘটনায়। তাঁকে গ্রাম ছাড়ার নিদান দিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত! অবশেষে তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের।
পাঁচ বছর আগে গ্রামের এক খামারে তুলো তুলতে গিয়ে গণধর্ষণের (Gangrape) শিকার হন বীর জেলার এক গ্রামের বছর পঁচিশের যুবতী। এবছরের গোড়ায় অপরাধীদের যাবজ্জীবনের নির্দেশও দিয়েছে আদালত। কিন্তু পঞ্চায়েত ‘শাস্তি’ বরাদ্দ করেছে নির্যাতিতার জন্যই! কেবল ওই গ্রামই নয়। পাশের আরও দু’টি গ্রামের পঞ্চায়েতও জানিয়ে দিয়েছে ওই যুবতীর কোনও স্থান নেই তাঁদের গ্রামে। গত আগস্টেই বাড়ির দরজায় আটকে দেওয়া হয়েছে গ্রাম ছাড়ার নোটিশ। দেওয়া হচ্ছে নিরন্তর চাপ। অসহায় নির্যাতিতা এবার দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের। জানিয়েছেন, কেবল গ্রাম ছাড়তে বলাই নয়, রীতিমতো অশ্লীল বিশেষণে তাঁকে লাঞ্ছনা করেছেন গ্রামের প্রধানরা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সরকারের কাছ থেকে ন্যায় চাই আমি। সরকারই বলুক এবার আমি কোথায় যাব।’’
[আরও পড়ুন: ভারতে করোনা ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিতে ১ জানুয়ারি ফের বৈঠক বিশেষজ্ঞদের কমিটির]
এই পরিস্থিতিতে গ্রামের মুখিয়া কী বলছেন? তিনি অবশ্য জানাচ্ছেন, সবই গ্রামবাসীদের দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের সকলের দাবি ওঁকে গ্রাম ছাড়তে হবে। তাই গত আগস্টেই আমরা ওই নিদান দিয়েছিলাম।’’ জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপারিটেন্ডেন্ট জানাচ্ছেন, ‘‘গ্রামের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁর উদ্দেশে অশ্লীল শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন ওই যুবতী। এরই মধ্যে গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এসে আমাকে জানিয়েছে, ওঁর অভিযোগে পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই।’’ কিন্তু পুলিশ পুরো বিষয়টিই খতিয়ে দেখবে বলে দাবি ওই পুলিশ অফিসারের।