বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সংসদের লগ ইন আইডি শুধুমাত্র দুবাই থেকে নয়, নিউ জার্সি ও বেঙ্গালুরু থেকেও ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই সময় মহুয়া ছিলেন কলকাতা ও তারপর উপস্থিত ছিলেন দিল্লিতে। এই খবর জানা গিয়েছে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক সূত্রে।
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের সদস্যপদ খারিজ করতে সবরকমের কৌশল নেবে বিজেপি বলেই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেছিলেন, মহুয়াকে সংসদ থেকে তাড়ানোর পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। এদিনের তথ্য সেই অভিযোগই আরও জোরদার করল।
[আরও পড়ুন: বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশের বিদেশ সচিব, উত্তর-পূর্বে সন্ত্রাসের মেঘ দেখছে দিল্লি?]
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে সংসদে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন কাণ্ডে তদন্ত শুরু করে এথিক্স কমিটি। তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মহুয়াকে। তারপরে তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করার দাবিতে সিলমোহরও পড়ে। ৯ নভেম্বর এথিক্স কমিটির ছয় সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মহুয়াকে বহিষ্কারের বিরুদ্ধে ভোট দেন চার বিরোধী সাংসদ। এথিক্স কমিটির ৫০০ পাতার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মহুয়া মৈত্র যে কাজ করেছেন তা ‘অনৈতিক ও আপত্তিকর’। কমিটি স্পিকারের কাছে সুপারিশ পাঠায়, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করা হোক। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই তা উত্থাপিত হতে পারে লোকসভায়। সংখ্যাধিক্যের জোরে ওই প্রস্তাব পাশও হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা লোকসভায়। অর্থাৎ, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।
কয়েক দিন আগে মহুয়া দাবি করেছিলেন যে, তিনি দর্শন হিরানন্দানির দুবাইয়ের অফিসটি শুধুমাত্র ব্যবহার করেছিলেন সচিবালয়ের পরিষেবার জন্যই। মহুয়া জানান, “হিরানন্দানির কাছে আমার সাংসদ লগ ইন আইডি আছে। তবে লগ ইনের এমন কোনও নিয়ম নেই যে, অন্য কাউকে তা দেওয়া যাবে না। কোনও সাংসদই নিজে সব প্রশ্ন করেন না। তাঁদের বৃহত্তর দলের কাছে থাকে এই আইডি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি বিদেশিকে আমার লগ ইন আইডি দিয়েছি। হিরানন্দানি আমার বন্ধু ছিলেন। তিনি ভারতীয়, তাঁর পাসপোর্টও ভারতের। আমি নিজে সুইজারল্যান্ডে থাকাকালীন লগ ইন করেছি। অন্যদিকে, আমার দিদির সন্তান লগ ইন করেছে কেমব্রিজ থেকে। সেখানে আমার হয়ে সে টাইপ করে দিয়েছে প্রশ্ন। এমআইসি-র পোর্টাল এতই সুরক্ষিত থাকলে অন্য আইপি অ্যাড্রেস থেকে লগ ইন করার ক্ষেত্রে উচিত ছিল তা ব্লক করে দেওয়া। আমাকে দিয়ে প্রশ্ন করানোর কোনও উদ্দেশ্যই ছিল না হিরানন্দানির। ওই সব প্রশ্ন তথ্য জানার অধিকার আইনের সাহায্যেই করানো যেতে পারত। আর প্রশ্ন পোস্ট করার সময় সব সময় আমার ফোনে ওটিপি আসে। অন্য কারও কাছে লগ ইন আইডি থাকলেও শেষ পর্যন্ত আমি ওটিপি দিলেই সেই প্রশ্ন পোস্ট হয়। সবকিছু দেখে আমি নিজেই প্রশ্ন পোস্ট করি।”