অর্ণব আইচ: মহিলা চিকিৎসকের বৃদ্ধ বাবাকে দেখাশোনার নাম করে বাড়ি থেকে দশ লক্ষ টাকার গয়না চুরির অভিযোগ উঠেছিল ৬ বছরের পুরনো পরিচারিকার বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল তাঁকে। পুলিশি জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি ধৃত মহিলা জানিয়েছেন, স্বামী নেই। একমাত্র ছেলেকে দাঁড় করাতেই চুরি করেছেন তিনি। তার বক্তব্য শুনে হতবাক পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা চিকিৎসক কড়েয়া থানা (Karaya Police Station) এলাকার দিলখুশা স্ট্রিটের বাসিন্দা। তিনি ও তাঁর বৃদ্ধ বাবা বাড়িতে থাকেন। বাবাকে দেখাশোনা করতেন পরিচারিকা জয়ন্তী মাইতি। ওই মহিলার উপরই বৃদ্ধ বাবা ও বাড়ি ছেড়ে দিয়ে কয়েক মাস আগে আমেরিকায় বোনের কাছে যান ওই মহিলা চিকিৎসক। কিছুদিন আগে কলকাতায় বাড়িতে ফেরেন তিনি। একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে যাওয়ার জন্য আলমারির লকার খুলে গয়না বের করতে গিয়ে হতবাক চিকিৎসক। বাড়ি থেকে উধাও দশ লক্ষ টাকার গয়না।
[আরও পড়ুন: রোগী ধরতে অনলাইন ফাঁদ, দালালরাজ রুখতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি বাংলার চিকিৎসকদের]
চিকিৎসক পরিচারিকা জয়ন্তীকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে তার বক্তব্যেও মেলে অসঙ্গতি। মহিলা চিকিৎসক কড়েয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে বুঝতে পারে যে, বাইরে থেকে লক ভেঙে বা কোনওভাবে দুষ্কৃতীরা ভিতরে প্রবেশ করেনি। তাই তাঁরা টানা জেরা করেন জয়ন্তীকে। শেষ পর্যন্ত জেরার মুখে জয়ন্তী স্বীকার করে যে, সে লকার থেকে চুরি করেছে গয়না। মেদিনীপুরের মোহনপুর থানা এলাকার আরুন্য গ্রামে হানা দেন কড়েয়া থানার আধিকারিকরা। তাঁরা ঘরের একটি গোপন জায়গা থেকে সোনার বালা, নেকলেস, আংটি, দুল-সহ গয়না ভরতি ব্যাগ পুলিশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে জেরার মুখে ওই পরিচারিকা দাবি করেছে যে, তার স্বামীর বহু আগেই মৃত্যু হয়েছে। একমাত্র ছেলে প্রায় কোনও কাজই করে না। কিন্তু তাকে দাঁড় করানোর জন্যই রোজগার করতেন তিনি। কিন্তু ওই বেতন বাড়িতে পাঠালেও তার ছেলের চলত না। বার বার মায়ের উপর টাকার জন্য ছেলে চাপ দিত, অভিযোগ এমনই। বাড়িতে তার উপর কেউ নজর রাখার নেই বলেই আলমারি থেকে গয়না সরিয়ে ফেলে। সেই গয়না ছেলের হাত দিয়েই পাচার করে দেয় মেদিনীপুরের বাড়িতে। মহিলাকে জেরা করে এই চুরির ব্যাপারে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।