সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: গা ঢাকা দিয়েও হল না শেষরক্ষা। মগরাহাট জোড়া খুন কাণ্ডের (Mograhat Double Murder Case) একদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত জানে আলম মোল্লা। খুনের ঘটনার পর থেকে এলাকা ছাড়া হয়ে যায় সে। জানে আলমের খোঁজ শুরু হয়। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ রাতভর তল্লাশি চালায়। মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে অবশেষে রবিবার দক্ষিণ কলকাতার চারু মার্কেট থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। রবিবারই আদালতে তোলা হবে ধৃতকে।
বেশ কিছুদিন আগে ইমারতি সামগ্রী কেনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী জানে আলম মোল্লাকে (Jane Alam Molla) টাকা দিয়েছিলেন মলয় মাখাল (২৭)। জানে আলমের কাছে মলয়ের পাওনা ছিল ৮০ হাজার টাকা। অভিযোগ, এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও ইমারতি দ্রব্য মেলেনি। টাকা চাইলেও ফেরত দেয়নি জানে আলম মোল্লা। এদিন টাকা ফেরত দেবেন বলে মলয়কে ডেকে পাঠান জানে আলম মোল্লা। মলয়ের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু সিভিক ভলান্টিয়ার বরুণ চক্রবর্তীও। বরুণ ও মলয় আসতেই তাঁদের নিজের কারখানায় ঢোকান জানে আলম মোল্লা। সেখানে তাঁদের খুন করা হয়।
[আরও পড়ুন: চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যু! হাওড়া হাসপাতালে ভাঙচুর পরিবারের, আক্রান্ত ২ চিকিৎসক]
এদিকে, কারখানার সামনে বরুণ-মলয়ের বাইক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা জানে আলমকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, কারখানার ভিতরে বসে বরুণ আর মলয় মদ্যপান করছে। কিন্তু জানে আলমের কথা বিশ্বাস হয়নি স্থানীয়দের। কারখানার দরজা ঠেলতেই তারা দেখে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। অভিযোগ, প্রথমে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে দু’জনকে খুন করা হয়। এরপরই জানে আলমের গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হয় জনতা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় গাড়িও। এই ঘটনার পর থেকে এলাকা ছাড়া হয়ে যায় অভিযুক্ত জানে আলম মোল্লা।
মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। এসডিপিও মিতুন কুমার দে’র নেতৃত্বে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পুলিশের ৬টি গাড়ি তাকে ধাওয়া করে। এলাকা ছেড়ে পালানোর সময় রবিবার সকালে কলকাতার চারু মার্কেট থানার পুলিশ জানে আলম মোল্লাকে আটকে দেয়। এরপর ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। এদিকে, রবিবার সকালে নিহতদের বাড়িতে যান জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, বিধায়ক নমিতা সাহা এবং ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিকরা। রাজ্যের তরফে আড়াই লক্ষ এবং বিডিওর তরফে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য নিহতদের পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।