সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী মাসেই মালদ্বীপে আসছে চিনা নজরদারি জাহাজ! দুদিন আগে একথা ঘোষণা করেছে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর প্রশাসন। এর পরই ভারতবিরোধী মনোভাবের জন্য প্রবল নিন্দার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁর সরকারকে। এই পদক্ষেপ যে আদতে দেশের জন্যই ক্ষতিকর তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীদল মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি-সহ সমমনা দলগুলো। বি্রোধীদের প্রবল প্রতিবাদের জেরে নিজের ঘরেই ক্রমশ চাপ বাড়ছে চিনপন্থী প্রেসিডেন্টের।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষদ্বীপ সফরের পরেই মালদ্বীপ-ভারত সংঘাত তুঙ্গে উঠেছে। এর মাঝখানেই চিন সফরে গিয়েছিলেন মুইজ্জু। কূটনৈতিক টানাপোড়েনের এই আবহে চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজের মালদ্বীপে আগমনে আরও অবনতি ঘটতে পারে দুই দেশের সম্পর্কে। এই নিয়েই এবার আশঙ্কা প্রকাশ করল মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি-সহ সমমনা দলগুলো। বুধবার এই দলগুলোর পক্ষ থেকে ভারতকে মালদ্বীপের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগী হিসাবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “এমডিপি ও অন্যান্য সমমনা দলগুলো বিশ্বাস করে দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহযোগী দেশকে দূরে সরিয়ে দিলে তা আমাদের জন্যই ক্ষতিকর হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের উন্নয়নে।” এই মন্তব্যের পাশাপাশি প্রশ্ন তোলা হয়েছে বর্তমান সরকারের বিদেশনীতি নিয়েও। বলে হয়েছে, সরকারের উচিত উন্নয়নের স্বার্থে সমস্ত সহযোগীদের সঙ্গে সমানভাবে কাজ করা।
[আরও পড়ুন: মালের সোনার খনিতে বড়সড় ধস, প্রায় ১ সপ্তাহ পর উদ্ধার ৭৩ দেহ]
কূটনৈতিক এই টানাপড়েনের জেরে মালদ্বীপের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এবিষয়ে বলা হয়েছে, “ভারত মহাসাগরে স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষা বজায় থাকা খুবই জরুরি। এটা মালদ্বীপের নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।” এদিন একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এমডিপির চেয়ারপার্সন ফায়াজ ইসমাইল, পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার আহমেদ সালিম ও অন্যান্য সমমনা দলের নেতারা এই কথাগুলো বলেন। ফলে চিনপ্রীতি ও ভারতবিরোধী মনোভাবের জন্য ক্রমশ চাপ বাড়ছে মুইজ্জু প্রশাসনের।
উল্লেখ্য, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’নামে চিনা জাহাজটির মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে পৌঁছনোর কথা। গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। এর আগে একাধিক চিনা নজরদারি জাহাজ ভারতের প্রতিবেশী আরেক দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে সাময়িক ঘাঁটি গেড়েছিল। ওই ঘটনায় কলোম্বোর উপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিল নয়াদিল্লি। পরবর্তীকালে ভারতের আপত্তিতে ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামের চিনা জাহাজটিকে হাম্বানটোটা বন্দরে ভিড়তে দেয়নি শ্রীলঙ্কা। এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও গুপ্তচর জাহাজটিকে ‘সমুদ্র গবেষণা’ জাহাজ বলে দাবি করেছে চিন সরকার। এই জাহাজটির আগমন মুইজ্জুর চিনা ঘনিষ্ঠতাকে আরও একবার প্রমাণ করেছে।