নন্দিতা রায়: “বাংলাদেশ নিয়ে আমার মন্তব্য বিকৃত করে বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। বিদেশনীতি সম্পর্কে আমি অনেকের চেয়ে ভাল জানি।” কড়া ভাষায় এমনই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি। সঙ্গে বিদেশমন্ত্রককেও একহাত নিয়েছেন মমতা। শুক্রবার দিল্লিতে রাজ্য সরকারের অতিথিশালায় সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভাল জানি। আমি সাত বারের সাংসদ, দুবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। বিদেশনীতি অন্য কারও চেয়ে ভাল জানি। কাউকে আমাকে শিক্ষা দিতে হবে না। বরং তাঁদের পরিবর্তিত ব্যবস্থা থেকে শেখা উচিত।”
কেন এই বিতর্ক ছড়িয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও এদিন বিশদে দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, “আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। আর বাংলাদেশের কিছু লোকও। সেটা অবশ্য তাদের দেশের বিষয়। আমি কখনও অন্য দেশের ব্যাপারে কথা বলিনি। এটা একটা দেশের সঙ্গে আর একটা দেশের সম্পর্ক। আমি সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।” বিদেশমন্ত্রক তাঁর বক্তব্য নিয়ে যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, তা নিয়ে পাল্টা ফারাক্কা ও তিস্তা ইস্যুতে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “দিন পনেরো আগেই ফারাক্কা নিয়ে দু’জনে মিলে বৈঠক করে ফেলেছে। অন্যতম তৃতীয় অংশীদার যে রাজ্য, তাদের বাদ রেখেই। তিস্তা নিয়েও কথা বলেছে।
[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে তাসের ঘরের মতো ধসে গেল বহুতল, ধ্বংসস্তূপে আটকে বহু]
বিদেশমন্ত্রক কি ভুলে গিয়েছে রাজ্যের অংশীদারিত্বের কথা! আগে সেটার উত্তর দিক।” মমতা এদিন আরও বলেছেন, “আমাদের সীমান্ত রয়েছে। অসমে যখন জাতি দাঙ্গা হয়েছিল, তখন তারা এসেছিল। আর রাষ্ট্রসংঘের নিয়ম অনুসারে আমি আশ্রয় দিতে বাধ্য। আমাদের অনেক লোক বাংলাদেশে রয়েছে। ছাত্র থেকে শুরু করে চিকিৎসক, বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাছাড়াও বহু অসুস্থ মানুষ বাংলাদেশ থেকে আমাদের রাজ্যে চিকিৎসার জন্য আসেন। আমি এটাই বলেছিলাম যদি ছাত্র, শিক্ষক কেউ আসে, বিশেষ করে অসুস্থ মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন, তাহলে মানবিকতার খাতিরে তাদের শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। এতে তো কোনও অন্য বিষয় নেই, এই পলিসি তো রয়েছেই। আর আমাদের দু’হাজারের বেশি ছাত্রকে তো এনেছি। তারা সীমান্তে অপেক্ষা করছিল। তাদের আমাদের পুলিশ নিয়ে এসেছে, বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছেও দেওয়া হয়েছে। তারা বাড়ি যেতে চাইলে আমি কি বারণ করব। আর পাসপোর্ট, ভিসা দেওয়া-সেগুলো তো কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।”