সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোট বাতিল ইস্যুতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ দু’জনে মিলে বৃহস্পতিবার দিল্লির রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সামনে ধরনায় বসেন৷ মমতার কথায়, “জানতে চাই সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী টাকা ছাপানো হচ্ছে কি না! কারও অসুবিধা সৃষ্টি করতে এখানে আসিনি৷” কেজরি আবার নোট বাতিলকে স্বাধীনোত্তর ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তোপ দাগেন৷ মমতা ও কেজরি দুজনেরই বক্তব্য, “কেন্দ্রকে তিনদিন সময় দেওয়া হল৷ নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে হবে কেন্দ্রকে৷” নইলে মানুষ বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন দু’জনেই৷ অজাদপুরে দাঁড়িয়ে কেজরি বলেন, “কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে মানুষ বিদ্রোহ ঘোষণা করবে৷” আর মমতার বক্তব্য, “তিনদিন সময় দিলাম৷ তিনদিনে এই সমস্যা না মিটলে আমি সবদিক ভেবে আরও বেশি কর্মসূচি গ্রহণ করব৷ বিজেপি ক্যাডারদের গালাগালিকে আমি অন্তত ভয় পাইনা৷”
দেশজুড়ে প্রতিবাদের পর এখন রাজধানীর রাস্তায় মানুষের সামনে আসছেন মমতা৷ সাংবিধানিক প্রধান রাষ্ট্রপতির মুখোমুখি হওয়ার পর এবার সাধারণ মানুষের সামনে আসছেন তিনি৷ সংবিধানের দু’টি প্রধান দিকে সমস্যার কথা তুলে ধরছেন মমতা৷ এই ইস্যুতে গতকালই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁর কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে আসেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী৷ নোট বাতিলের গেরোয় পড়ে যে মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে, তাও জানান৷ তুলে ধরেন অনিয়ন্ত্রিত বাজার অর্থনীতির কথা৷ বাজারে পর্যাপ্ত নতুন নোটের অর্থের জোগান না থাকায় কোনও টাকাই বাজারে খাটছে না৷ যার ফলে মুনাফা হওয়ারও জায়গা নেই৷ স্বাভাবিকভাবে বাজারে মন্দার কারণে যে কোনও দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করবে৷ পাশাপাশি গরিব ও সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷ কার্যত সমস্ত কাজ বন্ধ রেখে যখন-তখন ছুটে যেতে হচ্ছে ব্যাঙ্কে৷ বাড়তি দামের জেরে পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷ এই গোটা চিত্রটা তুলে ধরা হয় রাষ্ট্রপতির কাছে৷ অবিলম্বে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন৷
অন্যদিকে, এদিনই লোকসভার অধিবেশন শুরু হয়৷ অধিবেশনে বিরোধীরা একসুরে প্রতিবাদে শামিল হওয়ায় লোকসভা এদিনের মতো মুলতবি হয়ে যায়৷ রাজ্যসভায় পরিস্থিতি অনেকটা সামাল দেওয়া যায়৷ বেলা সাড়ে এগারোটা ও দুপুর দুটো নাগাদ মুলতবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন৷ কক্ষ সমন্বয় করে লাগাতার একজোটে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল সব ক’টি বিরোধী রাজনৈতিক দল৷ সেই দলে প্রথম থেকেই তৃণমূলের পাশে রয়েছে আপ, শিবসেনা, কাশ্মীরের ওমর আবদুল্লাহ, মুলায়ম সিং যাদব, লালুপ্রসাদ যাদবের মতো নেতৃত্ব৷ ফলে দেশজুড়ে মানুষের হয়রানির সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভে উত্তাল হল সংসদের দুই কক্ষ৷ শেষে লোকসভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়৷ যদিও বিরোধীদের লাগাতার চাপের মুখেও কেন্দ্র যে নিজের সিদ্ধান্তে অটল, সে কথা আজ ফের একবার মনে করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ বলেন, “সরকারের এখনই ১০০০ টাকার নোট আনার কোনও পরিকল্পনা নেই৷ আপাতত নতুন ২০০০ হাজার, ৫০০ টাকার নোট ও ১০০ টাকা দিয়ে কাজ চালাতে হবে ভারতবাসীকে৷”
The post নোট বাতিল ইস্যুতে আরবিআইয়ের সামনে ধরনা মমতা-কেজরির appeared first on Sangbad Pratidin.