সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের আক্রমণাত্মক মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নিজের দলের নেতা-মন্ত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা তথা বিজেপি সরকারকে একহাত নিলেন তিনি। একের পর এক রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারিতে এবার ষড়যন্ত্রের তত্ত্বেই কার্যত সিলমোহর দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। এরপরই গরু পাচার মামলায় বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে রয়েছেন তৃণমূলের আরও নেতা-মন্ত্রীরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে এবার ‘ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব’ তুলে ধরলেন মমতা। সরকার ফেলতে ষড়যন্ত্র করে আগামী দিনে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), অরূপ বিশ্বাস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দেরও গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও বিজেপির বোঝাপড়া হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)।
[আরও পড়ুন: ‘আমার সঙ্গে কথা বলবে তো?’ ভারত-পাক ম্যাচ শেষে জাদেজাকে প্রশ্ন ‘নিন্দুক’ মঞ্জরেকরের]
রবিবার ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষে এদিন মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশ থেকে মন্তব্য রাখতে গিয়ে কটাক্ষের সুরে তিনি বলে দেন, “বাংলায় সরকার ফেলার জন্যই একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ববিকে গ্রেপ্তার করো। অরূপকে গ্রেপ্তার করো, অভিষেককে গ্রেপ্তার করো। ভেবেছ, তাহলেই আর নির্বাচনে তৃণমূল জিততে পারবে না।” এরপরই সাধারণ মানুষের উদ্দেশে যোগ করেন, “বিজেপির (BJP) মিডিয়ার সঙ্গে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বোঝাপড়া) আছে। তাই ওদের একটা কথাও বিশ্বাস করবেন না। যদি দেখেন ববির অনেক সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। তাই ওকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুঝবেন সব সাজানো। টোটালটাই নাটক, মিথ্যে।” এরপরই যোগ করেন, “এই তো আজ অভিষেক (Abhishek Banerjee) এত ভাল বক্তৃতা দিয়েছে। কাল ওকে না আবার নোটিস ধরায়। আগেও ওকে, ওর স্ত্রীকে (রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়) নোটিস ধরিয়েছে। কাল আবার ২ বছরের বাচ্চাটাইকেই না নোটিস দিয়ে বসে।”
এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গড়ে দাঁড়িয়ে আমজনতার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন মমতা। জানতে চেয়েছিলেন, “আমার বাড়িতে ইডি-সিবিআই পাঠালে কী করবেন? রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন তো?” এদিন আর প্রশ্ন নয়। সরাসরি হুঙ্কার দিলেন, তাঁকে জেলে ভরলেও দমিয়ে রাখা যাবে না। মমতার কথায়, “তুমি আমাকেও বন্ধ রাখো না। আমাকে বন্ধ রেখেও দেখো না, কী হয়। নির্বাচনের আগে তো মেরেছিলে। ভেবেছিলে আমি বেরতে পারব না। মনে রেখো, জেলে থাকলেও ঠিকরে ঠিকরে বের হব। দমানো যাবে না।”
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুই ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। দু’জনের নামে বহু সম্পত্তির হদিশও মেলে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ‘সাজানো তত্ত্বে’র পর রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি ঘুরিয়ে পার্থর পাশেই দাঁড়ালেন মমতা? নেতা-মন্ত্রীদের আসলে ক্লিনচিটই দিতে চাইলেন তিনি?