সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট পরবর্তী বিক্ষিপ্ত হিংসার খবর আসছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এমন পরিস্থিতিতে শপথ নেওয়ার আগেই প্রকৃত অভিভাবকের ভূমিকা পালন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানোর পাশাপাশি মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজিপি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠালেন তিনি। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে জরুরী বৈঠকে বসছেন ভাবী মুখ্যমন্ত্রী।
ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিংসার খবর আসছে। মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের। অভিযোগ, ঘরছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহু কর্মী। সবমিলিয়ে বেশকিছু এলাকায় আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, “বাংলা শান্তিপ্রিয় রাজ্য। ভোটের সময় রাজ্যে কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যবাসীর উপর বিজেপি এবং আধা সামরিক বাহিনী অত্যাচার করেছে।” এর পরই রাজ্যবাসীর উদ্দেশে মমতার বার্তা, “রাজ্যবাসীকে আমি আবেদন জানাব, শান্তি বজায় রাখুন। অশান্তিতে জড়িয়ে পড়বেন না। কোনও সমস্যা হলে পুলিশকে জানান। ওঁরা ব্যবস্থা নেবে। পুলিশকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।”
[আরও পড়ুন : মমতার শপথগ্রহণে আমন্ত্রিত বুদ্ধদেব-সৌরভ, দেখে নিন আর কারা রয়েছেন তালিকায়]
তবে শুধু বার্তা দিয়েই হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি মমতা। নেত্রীসুলভভাবেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে এগিয়ে এলেন তিনি। মঙ্গলবার মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদী, ও ডিজিকে বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডাকলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে গতকালই রিপোর্ট তলব করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এমনকী, রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপ তৈরি করতে আজই দু’দিনের বঙ্গ সফরে এলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। এদিকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ফোন করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর ধনকড় রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন বলে খবর।
[আরও পড়ুন : ‘নগরীর নটীদের টিকিট কে দিয়েছিল?’ পায়েল, শ্রাবন্তীদের হারে BJP নেতৃত্বকে তোপ তথাগতর]
গতকালই বাংলা থেকে নির্বাচনীবিধি প্রত্যাহার করেছে নির্বাচম কমিশন। ফলে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব ফিরেছে রাজ্যের হাতে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মমতা। তবে নতুন সরকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত তাঁকে ‘কেয়ার টেকার’ মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে বলেছেন রাজ্যপাল। আর সেই দায়িত্ব পালন করলেন মমতা। শপথগ্রহণের আগেই রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনতে ‘অভিভাবক’ হয়ে উঠলেন তিনি।