দীপঙ্কর মণ্ডল: দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরমে। বুধবার সকালেও তমলুকের বর্গভিমা মন্দিরে পুজো দিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বিঁধেছেন তিনি। বিকেল গড়াতে না গড়াতেই বদলে গেল সব কিছু। সংঘাতের মাঝে আচমকাই রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী। ঘণ্টাখানেকের মতো রাজভবনে ছিলেন মমতা। তা টুইট করে জানান রাজ্যপালও। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর বলে প্রথমবার টুইট করেছিলেন ধনকড়। পরে যদিও টুইট মুছে দেন। অভ্যর্থনার কথা উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। আলোচনার বিষয়বস্তু এখনও জানা যায়নি। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন। নবান্নের তরফে দাবি করা হয়েছে রাজ্যপালের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার বিকেল ঠিক পাঁচটা পঁচিশ নাগাদ আচমকাই রাজভবনে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অ্যাসেম্বলি গেট দিয়ে রাজভবনে প্রবেশ করেন। জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে আলোচনা সেরে সন্ধে ছ’টা সতেরো নাগাদ অ্যাসেম্বলি গেটের বিপরীত রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর বলে টুইটে প্রথমে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। পরে সেটি ডিলিট করে দেন তিনি। সস্ত্রীক রাজ্যপাল মমতাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন সেকথা দ্বিতীয়বার টুইটে জানিয়েছেন ধনকড়।
আচমকা রাজভবনে কেন মুখ্যমন্ত্রী? রাজ্যের সাংবিধানিক এবং প্রশাসনিক প্রধানের আলোচনার বিষয়বস্তু কী? সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আচমকা রাজভবন সফরকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলেই দাবি করছে নবান্ন। রাজভবন সূত্রে অবশ্য এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
[আরও পড়ুন: প্রমাণ ছাড়া তোলাবাজির অভিযোগ! বাবুল সুপ্রিয়কে আইনি নোটিস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের]
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। প্রায় প্রতিদিনই টুইট করে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। নবান্ন-রাজভবনের মধ্যে টুইট-পালটা টুইট কিংবা চিঠি আদানপ্রদানও লেগেই রয়েছে। রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তারই মাঝে এদিন সকালে পূর্ব মেদিনীপুরে যান জগদীপ ধনকড়। তমলুকের বর্গভিমা মন্দিরে পুজো দিয়ে রাজ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবি জানান।
সার্কিট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যপাল। আমফান দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ শানান। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের পাশাপাশি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ‘ব্যর্থ’ মুখ্যমন্ত্রী বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর রাজভবন সফর। যা নিয়ে চলছে জোর চর্চা।
[আরও পড়ুন: কলকাতার সব ওয়ার্ডে একসঙ্গে হবে করোনার টিকাকরণ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে ব্যবস্থা নেবে পুরসভাই]