দীপঙ্কর মণ্ডল: সমস্ত কানাঘুষোকে মিথ্যা প্রমাণ করে অটুট রইল ‘মমতার সংসার’। সোমবার মেদিনীপুরে দলের জনসভায় অধিকারীদের ছাড়া সবাইকে পাশে পেলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikary) ঘনিষ্ঠ বিধায়করা এদিন মঞ্চ আলো করে বসেছিলেন। জনপ্রতিনিধিরা সবাই উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা দিদিরই অনুগামী। দিদিতেই আস্থা আছে গোটা দলের।
শুভেন্দুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল এদিন সভামঞ্চে ছিলেন। ছিলেন নন্দীগ্রামের ‘শহিদ জননী’ ফিরোজা বিবি। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সংগ্রাম দলুইকেও মঞ্চে দেখা গিয়েছে। সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার আগে অখিল গিরিকে দেখে দাঁড়িয়ে যান মমতা। পূর্ব মেদিনীপুরের কার্যকরী সভাপতি অখিলের মাধ্যমে একে একে ডেকে নেন পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের। সবার উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা সবাই আন্দোলনের মধ্যে থেকে উঠে এসেছেন। মাথা উঁচু করে থাকবেন। ভয়ের কিছু নেই। বিজেপিকে ভয় পাচ্ছেন কেন। ওরা জেলে পোরার হুমকি দেবে। কেউ ভয় পাবেন না।” দলের সমস্ত বিধায়কের সঙ্গে এদিন শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের করোনা গ্রাফে স্বস্তি, একধাক্কায় অনেকটাই কমল দৈনিক সংক্রমণ
শুভেন্দু যে এদিন মেদিনীপুর আসবেন না তা মোটামুটি পরিষ্কার ছিল। আসেনওনি নন্দীগ্রামের বিধায়ক। অসুস্থ থাকায় আসেননি তাঁর বাবা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী। ছিলেন না তাঁর সাংসদপুত্র দিব্যেন্দু অধিকারীও। পরিবারের ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি দিল্লিতে। পৌনে এক ঘণ্টার বক্তৃতায় একবারও শুভেন্দুর নাম উচ্চারণ করেননি তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, সবাইকে হাজির করিয়ে জবাব দিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি শুভেন্দু ও তৃণমূলের মধ্যে একটি যোগসুত্র বজায় রাখার কৌশলও নিয়েছেন দলের সর্বাধিনায়িকা। অসুস্থ থাকায় পূর্ব মেদিনীপুরের দুই বিধায়ক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার ও জ্যোতির্ময় কর আসতে পারেননি। একমাত্র বিধায়ক বনশ্রী মাইতির অনুপস্থিতির ব্যাখ্যা মেলেনি। দলনেত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ বলেন, “আমি যে দলের বিধায়ক সেই দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর সভা। তিনি ডেকেছেন। আমাকে তো আসতেই হবে।” মঞ্চে বসে ফিরোজা বিবির ছোট্ট জবাব, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে আমিও সেখানে আছি এবং থাকব।”
মেদিনীপুর শহরে মমতার সভায় আসেননি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের একটি বড় অংশকেও দেখা যায়নি। সম্প্রতি এই জেলার কয়েকজন ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলার কার্যকরী সভাপতির ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, পদ থেকে অপসারিতরা মেদিনীপুরের সভায় কর্মীদের আনার কোনও উদ্যোগ নেয়নি।