ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: গোয়া সফর সেরে আজ কলকাতা ফিরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই পুরভোটের প্রচারে পরপর দু’দিন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় দলের প্রার্থীদের নিয়ে ঝোড়ো সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী। মমতা একা নন, প্রচারে পরপর দু’দিন দু’টি মহামিছিল করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম সভাটি রয়েছে আজ, উত্তর কলকাতার ফুলবাগানে। থাকবেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে উত্তর কলকাতায় দলের ৬০ জন প্রার্থীকে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার মমতার জোড়া সভা। প্রথমটি বেহালা চৌরাস্তায়। দ্বিতীয়টি বাঘাযতীনে। গড়িয়াহাট থেকে একদিকে বেহালা এবং অন্যদিকে, টালিগঞ্জ ও যাদবপুরের মতো বিস্তৃত এলাকার ৮৪ জন প্রার্থীর জন্য প্রচার সারবেন মমতা। প্রত্যেক প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে থাকবে শীর্ষ নেতৃত্বও।
বৃহস্পতিবার থেকে পরপর দু’দিন মহামিছিল অভিষেকের। প্রথমটি ১৬ তারিখ দুপুর দু’টোয়। বড়বাজারের রাজাকাটরা থেকে শিয়ালদহ হয়ে বউবাজারের ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া পেরিয়ে শশীভূষণ দে স্ট্রিট পর্যন্ত। পরদিন দ্বিতীয় মহামিছিল অভিষেকের। সেটি শুরু হওয়ার কথা ঢাকুরিয়া এলাকার আশপাশ থেকে। বোঝাই যাচ্ছে একেবারে ঠাসা কর্মসূচি তৃণমূলনেত্রী ও অভিষেকের।
[আরও পড়ুন: নিজের মেয়েকে লাগাতার যৌন নির্যাতন জন্মদাতা বাবার! যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত]
১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পুরভোট। তার প্রচারপর্বে ইতিমধ্যে ঝোড়ো ইনিংস শুরু করেছে তৃণমূল। প্রথমে পুরবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার থেকে শুরু করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এলাকার ছোটখাট সমস্যা সমাধানের পর্ব চলেছে। তারপর চমক রাখতে টেলি তারকাদের নিয়ে চলছে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার। ফলে আগ্রহ বাড়ছে। এবার অভিজ্ঞতার সঙ্গে নতুন কর্মঠদের মিশেল রাখা হয়েছে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। মমতা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন মহিলাদের। মহিলা সংরক্ষণের বাইরেও অতিরিক্ত প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রচার জমজমাট। একেবারে শেষ পর্বে এসে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূলনেত্রী নিজে নামছেন প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে।
পুরভোটে সিংহভাগ আসন জিতবে বলে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। ইতিমধ্যে দলের অন্তর্বর্তী সমীক্ষায় উঠে এসেছে সেই তথ্য। বিরোধী দলগুলি দশের অঙ্কও পেরোতে পারবে না বলে দাবি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের শুধু আসন সংখ্যাই নয়, ভোট শতাংশের পরিমাণও বাড়বে বলে দলীয় সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। একুশের ভোটে বিজেপিকে ঠেকিয়ে বড় জয় পেয়েছে তৃণমূল। তারপরই দলকে জাতীয় স্তরে বিস্তার দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন অভিষেক। ত্রিপুরায় ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে তারা। মেঘালয়ে পেয়েছে বিরোধী দলের মর্যাদা। ফেব্রুয়ারিতে গোয়ায় বিধানসভা ভোট। তার আগে সেখানেও দলকে রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরতে সবরকম চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে বাংলা মডেলে ‘গৃহলক্ষ্মী কার্ড’-এর ঘোষণা করে সেখানে ইস্তাহার প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য বা ভিনরাজ্যে, গ্রাম ও শহরে তৃণমূলকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। পুরভোটে মানুষের এই আগ্রহই তাদের প্রচারে এগিয়ে রেখেছে বলে দাবি শাসক দলের।