স্টাফ রিপোর্টার: সামনের বছর বইমেলায় দেড়শো ছোঁবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) লেখা বইয়ের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার কলকাতা বইমেলার উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, এ পর্যন্ত ১৪৩টি বই প্রকাশ হল তাঁর। সামনের বছর আরও ৭টি বই লিখে দেবেন। তাতেই মোট সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যাবে।
কলকাতা বইমেলা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বইমেলা হবে। এই আশা সামনে রেখে এদিন বইমেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর লেখা সাতটি বইও এদিন প্রকাশিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘১৯৯৫ সাল থেকে আমার বই বেরোয়। আমার প্রথম বই ‘উপলব্ধি’। আজকের হিসেব ধরলে আমার মোট বই ১৪৩টি। আগামী বছর আরও সাতটি বই লিখব বইমেলায় আগে। তাতেই দেড়শো হয়ে যাবে বইয়ের সংখ্যা।’’ উল্লেখ্য, এদিনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন গুজরাতি সমাজ। তাঁদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই চাওয়া হয়েছে গুজরাতি ভাষায় অনুবাদের জন্য। জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সম্মতিও দিয়ে দিয়েছেন। নিজেই সেই খবর জানিয়ে বলেন, ‘‘গুজরাটিদের আমি খুব ভালোবাসি। ওরা আমার বইগুলো ছাপাবে বলেছে। করুক। আমি জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কেমছো? ওরা বলল মজামা! আমার খুব ভাল লেগেছে।’’
[আরও পড়ুন: সমরশক্তিতে শীর্ষে আমেরিকা, তালিকায় কত নম্বরে ভারত ও চিন?]
এদিন এসবিআই অডিটোরিয়ামে প্রথা মেনে ৪৭বার হাতুড়ি মেরে বইমেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই বইমেলা। তার আগে বইমেলায় একাধিক স্টল ঘুরে দেখেন। বই কেনেন। কখনও বাউলদের হাত থেকে ডুবকি নিয়ে বাজান। কখনও আবার আদিবাসীদের নাচের তালে হাততালি দেন। কখনও আবার মহিলা ঢাকিদের সঙ্গে তাল তোলেন ঢাকে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধনী মঞ্চে সকলকে বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর আহ্বান জানান। বলেন, ‘‘এই বইমেলা একদিন বিশ্বের এক নম্বর হবে। বাংলাই পথ দেখায়, একটু সময় করে বই পড়ুন, নতুন প্রজন্ম বই পড়ুন।’’
এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি ব্রিটেন। মঞ্চে তাই এদিন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের আগে ব্রিটেনের জাতীয় সঙ্গীতও পরিবেশিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ব্রিটিশদের যোগাযোগ বহুদিনের। ১৭৫৭ সালের পর থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত ব্রিটিশরা এখানে প্রচুর কাজ করেছেন। স্থাপত্য, ভাস্কর্য অসামান্য। আমি লন্ডনে গেলে গাড়ি নিই না। অলিগলি হেঁটে ঘুরি, সব রাস্তা চিনি, লন্ডন শুধু ওনাদের নয়, আমাদেরও।’’ এবারের বইমেলায় ব্রিটেন-সহ ২৯টি দেশ অংশ নিয়েছে। একথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘আগে ছোট জায়গায় বইমেলা হত। এই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এখন কত বড় জায়গায় হয়! এই জায়গাটা আমরা বইমেলা কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দিয়েছি স্থায়ীভাবে।’’
[আরও পড়ুন: জন্মের প্রমাণপত্র হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় আধার! বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের]
এদিন সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণে কলকাতা পুরসভার ‘পূরশ্রী’-র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সাহিত্যিক বানী বসুর হাতে ড. রমাপ্রসাদ গোয়েঙ্কা সৃষ্টি সম্মান তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সাহিত্য সৃষ্টিতে জীবনভর অবদানের জন্য সিইএসসি প্রতি বছর বইমেলায় এই পুরস্কার দেয়। অনুষ্ঠানে গিল্ডের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সুধাংশু দে ও ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। দু’জনেই বইমেলাকে স্থায়ী ঠিকানা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালেক্স এল্লিস। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে মঞ্চে বসেই ছবি এঁকে নিজের লেখা ‘কবিতাবিতান’ বইয়ের ইংরেজি সংস্করণ উপহার দেন।