সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের মাঝে বাংলার রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্ন্যাসীদের রাজনৈতিক যোগ, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হামলা বিতর্কে। জলপাইগুড়ির 'সেবক হাউস', যা রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পত্তি, সেখানে রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হামলার অভিযোগ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। মঙ্গলবার তা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বারাসতের নির্বাচনী সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন, ''ঘটনার কথা আমার জানা নেই। আমরা ওসব ঘটনা সমর্থনও করি না। তবে আমাদের কেউ তাতে জড়িত নয়। যদি তদন্তে বেরয় যে আমাদের কেউ এর মধ্যে ছিল, কথা দিচ্ছি, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।''
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন (Ram Krishna Mission) আশ্রমের প্রধান প্রেমানন্দজি মহারাজ হামলার অভিজ্ঞতার কথা সর্বসমক্ষে জানিয়েছেন। তিনি জানান, ৩৫ জন দুষ্কৃতী মুখঢাকা অবস্থায় হামলা চালিয়েছিল শিলিগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের শাখা সেবক হাউসে। দুজন নিরাপত্তা কর্মী-সহ সাতজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। মহারাজের আরও দাবি করেন, “দুষ্কৃতীদের হাতে রড, কাটারি ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। প্রথমে আশ্রমের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে বন্দি করে। এর পর দোতলায় উঠে ৫ জন কর্মীকে আটক করে। পরে ওই সাতজনকে এনজেপি রেল স্টেশন ও অন্যত্র ছেড়ে দেয়।” তিনি আরও জানান, সেবক হাউজ রামকৃষ্ণ মিশনের নথিভুক্ত সম্পত্তি। এই বাড়িটিকে সেবামূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এবিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Narendra Modi)প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সোমবার ঝাড়গ্রামের সভা থেকে তিনি বলেন, “এখন তো হিন্দু সন্তদের হুমকি দিচ্ছে খোদ এখানকার মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে তৃণমূলের গুন্ডাদের সাহস বেড়ে গিয়েছে। কাল রাতে জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) রামকৃষ্ণ মিশনে আশ্রমে হামলা হয়েছে। মিশনের কর্মীদের মারধর করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি দেওয়া হবে, ভাবতে পারে না দেশবাসী। রামকৃষ্ণ মিশনকে অপমান মানে দেশের সাধু ও সন্তদের অপমান।”
[আরও পড়ুন: হিরণকে ‘বাংলায় বলো’ কাকার ফ্যান দেব! দিলেন রকস্টার খেতাব]
আর মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ''ওখানকার ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। বাংলায় কোথাও কোনও গন্ডগোল হলে, আমার কাছে তো খবরটা আসবে। আমার কাছে এরকম কোনও খবর আসেনি। আমার এক পরিচিত সাংবাদিক খোঁজখবর নিয়ে জানিয়েছেন, এটা পারিবারিক সমস্যা। অনেকে নিজেদের বাড়ি দান করে দেয় মিশন বা অন্য কোনও সেবা প্রতিষ্ঠানকে। এখানেও তেমনই হয়েছে। তার জন্য ঝামেলা। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। আমাদের কেউ তাতে জড়িত নয়। তবে এনিয়ে তদন্ত হোক। যদি তদন্তে বেরয় যে আমাদের কেউ এর মধ্যে ছিল, কথা দিচ্ছি, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।''
[আরও পড়ুন: প্রথমবার রুক্মিণীর বাবার সঙ্গে দেখা, নিজের পরিচয় কীভাবে দিলেন দেব? ভাইরাল ভিডিও]
এনিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রামকৃষ্ণ মিশন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তারা মানুষের জন্য কাজ করে। রাজনীতির সঙ্গে মিশনের সন্ন্যাসীদের কোনও যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই। কিন্তু এসব ঘটনায় মিশনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।