সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ‘কৃষকবন্ধু’ বনাম ‘কিষাণ সম্মান নিধি’। বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে উভয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও জোরকদমে। শুক্রবার ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে বরাদ্দ আরও বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণার পাশাপাশি তিনি জানালেন, ”কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পাবেন ভাগচাষিরাও। ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা করা হল।” এই সুবিধা চলতি বছর জুন মাস থেকে লাগু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, রাজ্যে যাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়, তার জন্যকে কেন্দ্রকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২০ তে করোনা, আমফানের মতো জোড়া বিপর্যয় সামলে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট তৈরি করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে বলে এদিন বাজেট ভাষণের শুরুতে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ফের অভিযোগ তোলেন, কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য পায়নি বাংলা। তা সত্বেও জনকল্যাণমূলক কাজে চলতি অর্থবর্ষে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। প্রসঙ্গত, কৃষক কল্যাণে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের প্রকল্প নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বরাবরের। রাজ্যের দাবি, ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের যে অর্থ কৃষকরা পাবেন, তার চেয়ে বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে। পালটা কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রীরাও রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, রাজনৈতিক সংঘাত জিইয়ে রাখতেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে রাজ্যের কৃষকদের বঞ্চিত রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে নিরন্তর টানাপোড়েনের পর সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য কেন্দ্রকে পাঠানো হয় রাজ্যের তরফে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বাজেট পেশের আগে বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা, উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি, ওয়াকআউট বিজেপির]
এবার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী জানান যে ওই টাকা এবার রাজ্যের কৃষকদের জন্য পাঠাতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের তরফেও কৃষক পিছু এই টাকা ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার করা হল। এই খাতে মোট ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হল। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন ‘কৃষক বিরোধী’, এই অভিযোগে কৃষক আন্দোলন চলছে দিল্লিতে। তা সমর্থন করে একাধিকবার বার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে বাংলার কৃষকদের মন পেতে এবং সামগ্রিকভাবে কৃষিক্ষেত্রে সরকারবান্ধব ইমেজ বজায় রাখতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।