সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শুরুতেই ঝড় তুলতে বদ্ধপরিকর বিজেপি৷ সেলক্ষ্যে, ‘রথযাত্রা’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে পদ্ম শিবির৷ এবার গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিকেই নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ঘোষণা করলেন পালটা কর্মসূচির৷ দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন বিজেপির উত্থান আটকানোর এবং সতর্ক থাকার৷ ছকে দিলেন আগামী লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল৷
[রোজগারে টান, বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে আন্দোলনে চালকদেরই একাংশ!]
শুক্রবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ ও সবস্তরের নেতারা৷ সকলেই উদগ্রীব ছিলেন নেত্রীর ভাষণের জন্য৷ উনিশের লোকসভার আগে কী রণকৌশল বাতলে দেন দলনেত্রী সেই কৌতূহলই ছিল সকলের মধ্যে৷ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বক্তৃতার আদ্যোপান্ত জুড়ে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অভিযোগ করেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির এবং জাতি ও ধর্মের ভেদাভেদে ভাগ করতে চাইছে তাঁরা৷ রাজ্যে গোপনে কাজ করছে বিজেপি ও তাঁদের সহযোগী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি৷ কেন্দ্রতে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে তিনি টেনে আনেন, সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ কর্তার মধ্যে চলমান বিবাদকে৷ হাতিয়ার করেন আরবিআইকে৷ বলেন, “সিবিআইকে রাজ্যে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে একদম ঠিক কাজ করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু৷”
এরপরই বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচিকে টার্গেট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কটাক্ষের সুরে বলেন, “ওটা জগন্নাথ বা শ্রীকৃষ্ণের রথ নয়৷ ওটা ফাইভ স্টার হোটেল৷ ওর মধ্যে খাওয়া-দাওয়া, ঘোরা-ফেরার এলাহি ব্যবস্থা রয়েছে৷ ওটা রাবণ যাত্রা৷” ঘোষণা করেন রাজ্যের শাসকদলের পালটা কর্মসূচি৷ বলেন, “রথযাত্রার পরের দিন একই স্থানে, একই সময়ে পালটা কর্মসূচি করবে তৃণমূল৷” মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মসূচির নাম দেন, ‘পবিত্র যাত্রা, শান্তি যাত্রা ও একতা যাত্রা’৷ বিজেপির কর্মসূচির সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন যে, বিজেপি যে দূষণ ছড়াবে তা পবিত্র করার জন্যই তৃণমূলের এই পালটা কর্মসূচি৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে রাজ্যের জঙ্গল মহলে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে বিজেপির৷ গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, জঙ্গলমহলে তাঁদের সংগঠন বাড়িয়েছে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ৷ এই বিষয়ে নেতা-কর্মীদের সজাগ করেন তিনি৷ নাম না করে নেতাদের হুঁশিয়ারি দেন তিনি৷ কাজ না করতে পারলে সরিয়ে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
[লোকসভায় ঝাড়খণ্ড-অসমেও লড়বে তৃণমূল, ঘোষণা মমতার]
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে জনসংযোগের ভিতকে আরও মজবুত করতে এবং নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রদর্শনে ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি। ৫ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে বেরোবে প্রথম রথ। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে অমিত শাহর। এরপর ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার এবং ৯ ডিসেম্বর কাকদ্বীপ থেকে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় রথযাত্রার সূচনা হবে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে একাধিক হেভিওয়েট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা আসছেন। বঙ্গে বিজেপির এই প্রথম রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে বিশ্লেষণও। বিজেপির সঙ্গে শাসক শিবিরের বাকযুদ্ধও চরমে। রথযাত্রাকে ঘিরে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও।
The post ‘ওটা রাবণ যাত্রা’! বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচিকে আক্রমণ মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.