অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ময়না, টিয়া, কাকাতুয়া থেকে দোয়েল, খঞ্জনা, কোকিল কি নেই! সুকন্ঠী পাখিদের হরেক রকমের আওয়াজেই মেতে উঠছে এলাকা। সচরাচর দেখতে না পাওয়া পাখিদের সেই সুমধুর আওয়াজ কানে যেতেই সেইসব পাখিদের দেখতে কার না মন চায়। তাই পাখিদের দেখতে বাড়ি থেকে ছুট দিলেও সাময়িকভাবে হতাশ হতে হচ্ছে তাঁদের। কারণ এই আওয়াজ পাখিদের হলেও তার বোল বের হচ্ছে বাঁশিওয়ালার কাছে থাকা অদ্ভূত সব বাঁশিতে। করোনায় কাজ না থাকায় রুটি রুজির টানেই সূদূর ক্যানিং (Canning) থেকে পূর্বস্থলী, মন্তেশ্বর, মেমারিতে এসে সেইসব বাঁশিই বিক্রি করছেন সুমন মিস্ত্রী নামে এক যুবক। আর তা বিক্রি করেই লাভের মুখ দেখছেন তিনি।
করোনা আবহে ব্যবসা বাণিজ্যের হালও খুব একটা ভাল নয়। ছোটখাট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষজনের সমস্যা রয়েছে বেশ। আর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজনের সমস্যা তো রয়েছেই। এমনই ছোটখাট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সুমন মিস্ত্রী বর্তমানে এখন বাঁশি বিক্রেতার ভূমিকায়। আর এই বাঁশি বিক্রি করতেই তিনি পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যাচ্ছেন। অসাধারণ প্রতিভাবান সুমন মিস্ত্রী কাঠের তৈরী সেইসব বাঁশিতেই তুলছেন বিভিন্ন সুকন্ঠী পাখিদের বোল। সেই বাঁশিতে শুধু পাখিরাই ডাকছে না, গানও গাইছে, আবার কথাও বলছে। আর তা দেখে শুনেই ছুটে আসছেন এলাকার মানুষজন। যেতে যেতে থেমে যাচ্ছেন পথচলতি মানুষজনও। এক বাঁশিতেই এত ধরনের মন কেড়ে নেওয়া সুর তা সত্যিই নজর কাড়ার মতো। স্বাভাবিক কারণেই সেই বাঁশির দাম বেশী হবে মনে করে প্রথমে কেউ হাত দিচ্ছেন না। পরে ১০ টাকার বিনিময়েই সেই বাঁশিই মুড়ি-মুড়কির মতো কিছু জায়গায় বিক্রি হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন সুমন।
[আরও পড়ুন: শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন রণক্ষেত্র হাড়োয়া, প্রাণ গেল ২ TMC সমর্থকের]
তাঁর কথায়, “করোনা পরিস্থিতিতে ছোটখাট ব্যবসাতে লাভ হচ্ছে না। আগে ট্রেনে-বাসে বাঁশি বিক্রি করতাম। সেগুলিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুটি রুজির টানেই ক্যানিং থেকে বাঁশি বিক্রি করতে এখানকার বিভিন্ন বাজারে ঘুরছি। এই বাঁশিতে শুধু পাখিদের ডাকই হয়না। এই বাঁশি গানও গায়, আবার কথাও বলে।” বাঁশি কিনতে আসা হরি ঘোষ, সুদেব প্রামাণিকরা বলেন, “ওই যুবকের অসাধারণ প্রতিভা রয়েছে। বাঁশিতে বিভিন্ন পাখির বোল যেভাবে উনি তুলছেন তা শুনে মনে হচ্ছে সত্যিই সেইসব পাখিরা যেন এখানে চলে এসেছে। তা দেখতেই মানুষজন ছুটেও আসছেন।”এই বাঁশি যে শুধু কচিকাঁচারাই কিনছে তা কিন্তু নয়, বাচ্চাদের নাম করে সেইসব পাখিদের আওয়াজের বাঁশি কিনে আড়ালে-আবডালে ফুঁ মেরে নষ্টালজিয়ায় ফিরে যাচ্ছেন যুবক-যুবতীরাও।
[আরও পড়ুন: মৃত চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে ৭ বছর ডাক্তারি, হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার জালিয়াত]