সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধুনিক প্রযুক্তি সত্ত্বেও টানা ১৮ ঘণ্টার অপারেশনে দেহ উদ্ধার করতে পারেননি দমকল কর্মীরা। তবে মাত্র ৪৫ মিনিটে সেই কাজ করে দেখিয়েছেন একজন পাতকুয়ো মিস্ত্রি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পাতকুয়োয় নেমে উদ্ধার করেছেন যুবকের দেহ। অবশ্য ভাল কাজ করে মিলল পুরস্কার। কম সময়ে দেহ উদ্ধারের জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়া হল তাঁকে।
শুক্রবার দুপুরে বাঁশদ্রোণীর ওই কুয়োর পাশে গিয়েছিলেন সম্রাট সরকার ওরফে বাপি। বছর আঠাশের ওই যুবকের মৃগী রোগ রয়েছে। তাই চাকরি পাননি তিনি। সম্ভবত নিজের শারীরিক সমস্যার কারণে বিয়েও করেননি বাপি। ওই যুবক গতকাল দুপুরে গিয়েছিলেন স্নান করতে। আবার কারও দাবি, তিনি গিয়েছিলেন বাসন মাজতে। তখন প্রায় ৫০ ফুট গভীর কুয়োও পড়ে যান বাপি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তবে ব্যর্থ হয়ে দমকলে খবর দেওয়া হয়। তিনটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় মেলেনি সাফল্য। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর খবর দেওয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। হাজারও আধুনিক যন্ত্রপাতি তা সত্ত্বেও দেহ উদ্ধার করতে পারেনি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। পাতকুয়োর দিকে কাটিয়ে দুশ্চিন্তার রাত কাটান বাপির পরিজনেরা। শনিবার সকালে জোরকদমে আবারও শুরু হয় উদ্ধারকাজ। তবে প্রথম কয়েকঘণ্টার চেষ্টা পরেই দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী হাল ছেড়ে দেয়। তবে ততক্ষণে কেটে গিয়েছে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। ডেকে আনা হয় পাতকুয়ো মিস্ত্রি মেঘনাদ সরকারকে। তিনি শুধুমাত্র একটি অক্সিজেন মাস্ক এবং বেল্টের সাহায্য নিয়ে নেমে পড়েন কুয়োয়। পাতকুয়োর জল ছেঁচে ফেলাও শুরু হয়। এছাড়াও মাটি কেটে যুবক বাপির দেহ উদ্ধার করা হয়। গোটা অপারেশনে সময় লাগে মাত্র ৪৫ মিনিট। তার মধ্যেই বাপির দেহ উদ্ধারে সমর্থ হন মেঘনাদ। নিহত বাপির পরিজনদের দাবি, দমকলের পরিবর্তে পাতকুয়ো মিস্ত্রিকে আগে কাজে লাগানো গেলে হয়তো এমন অঘটন হত না।
[আরও পড়ুন: বর্ষণেই বর্ষবরণ, জবুথবু শীতে বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে]
মেঘনাদ সরকার প্রায় ২৫ বছর ধরে পাতকুয়ো মিস্ত্রি হিসাবে কাজ করছেন। তাই পাতকুয়োর নিচে নেমে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এর আগেও একবার ঠিক এভাবে দেহ উদ্ধারের অভিজ্ঞতা রয়েছে মেঘনাদের। তবে কখনও পুরস্কার পাননি তিনি। বাপির দেহ উদ্ধারের পরই ভাল কাজের পুরস্কার পেলেন মেঘনাদ। তাঁকে রাজ্যের পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি। প্রায় দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে একই কাজ করার পর স্বীকৃতি মেলায় খুশি মেঘনাদ। তবে বাপিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলে বেশি খুশি হতেন বলে জানান ওই পাতকুয়ো মিস্ত্রি।
The post দক্ষতার পুরস্কার, ৪৫ মিনিটে যুবকের দেহ উদ্ধার করে চাকরি পেলেন পাতকুয়ো মিস্ত্রি appeared first on Sangbad Pratidin.