শম্পালী মৌলিক: ‘কার কাছে কই মনের কথা’ ধারাবাহিকে ‘শিমুল’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য দর্শকের ভালবাসা পাচ্ছেন মানালি দে (Manali Dey)। এদিকে আবার শিমুলের শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করে চক্ষুশূল ঋতা দত্ত চক্রবর্তীর চরিত্র মধুবালা। এমন ভয়ংকর শাশুড়ি কি বাস্তবে হয়? জবাব দিলেন মানালি।
‘কার কাছে কই মনের কথা’ জি বাংলায় শুরু হয়েছে জুলাই মাসে। তার মধ্যেই ভাল রেটিং পেয়েছে। সেই সঙ্গে দর্শকরাও ভালবাসছে। ফোনে কথা হচ্ছিল মেগা ধারাবাহিকটির কেন্দ্রচরিত্র ‘শিমুল’ অর্থাৎ মানালি দে-র সঙ্গে। হাসতে হাসতে তিনি বললেন, “মোটামুটি লোকের ভাল লাগছে। সেটা ডেফিনিটলি দারুণ লাগছে। সত্যি কথা বলতে, আমি কখনওই টিআরপি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না। কিন্তু ভাল রেজাল্ট পেতে কার না ভাল লাগে! আর যেটা সবসময় মনে হয়, লোকের যদি ভাল লাগে, তাহলে কাজ করার ইচ্ছে আরও বেড়ে যায়। যদি দর্শকের ভাল না লাগে, তখন মনে হয় আরও ভাল করতে হবে। মোদ্দা কথা, দুটো ক্ষেত্রেই ভাল হওয়া চাই।”
কিন্তু এমন ভয়ংকর শাশুড়ির চরিত্রের পোর্ট্রেয়াল, তেমন কি বাস্তবে দেখা যায়? প্রশ্নে অভিনেত্রী স্পষ্ট জবাব, “একদম হয়। অনেক মেয়ের জীবনে এমন ঘটনা আমি দেখেছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্টে এসেও অনেকে লিখছেন। গয়না কেন বাপের বাড়ির তত্ত্বাবধানে, কেন শ্বশুরবাড়িতে নেই- সেই নিয়ে বেশ কিছু মেয়েকে অসুখী জীবন কাটাতে হয়।”
[আরও পড়ুন:প্রিয়াঙ্কার প্রেমে ‘কুরবান’ অঙ্কুশ, নতুন ছবিতে বড় চমক জুটির]
শিমুল লড়ছে নিজের সুপ্ত প্রতিভা বাঁচানোর তাগিদেও। পাড়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচতে চেয়েছে সে। যার সঙ্গে অনেক মেয়েই কানেক্ট করতে পারছে। কোন ম্যাজিকে মানালি টেলিভিশনে পর পর হিট দেন? “এই রে, ম্যাজিক জানি না। সব প্রোজেক্টের জন্যই রাইটারদের ধন্যবাদ জানাব। যে তাঁরা এবং চ্যানেল আমাকে নির্বাচন করে। লেখকদের একশো শতাংশ কৃতিত্ব থাকে, আর আমাদের কিছুটা থাকে। সেইখান থেকে আমি লাকি যে, প্রতিবার খুব ভাল ভাল স্ক্রিপ্ট পাই। আর ভাল কনটেন্টে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। বাকিটা দর্শকদের ভালবাসা। হয়তো নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি সেটা দর্শকদের ভাল লাগে”, জবাব অভিনেত্রীর।
কিছু সময় আগে তিনি ‘ধুলোকণা’-য় অভিনয় করেছিলেন স্টার জলসা চ্যানেলে। এখন আবার জি বাংলায় এসেই ভাল ফল। “টাচ উড, এটা ধরে রাখতে চাই।”– প্রত্যয়ী শোনায় অভিনেত্রীকে। শহর থেকে মফস্সলে আসা একটি মেয়ে শিমুল। বিয়ের পরে সাংসারিক জীবনে লড়াই করছে। শ্বশুরবাড়ির কারও সাহায্য পাচ্ছে না। এ তো যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তাও প্লট-টা ভাললাগা পাচ্ছে কী করে? মানালির জবাব, “গল্পটা একটু হলেও আলাদা। কারণ, এখানে আমি ছাড়া আরও চারটি মেয়েকে দেখানা হচ্ছে। আর মেয়েরা মেয়েদের শত্রু হয়- এমন ধারণার বিপরীতে কথা বলছে প্লট-টা। শ্বশুরবাড়ির পাড়ায় কীভাবে নতুন বন্ধুরা শিমুলকে সাহায্য করছে সেটা দেখাচ্ছে। সচরাচর আমরা দেখি মেয়েটি একা লড়াই করছে, পাশে কেউ নেই। এখানে শিমুলের চরিত্র মুখ বুজে সহ্য করার নয়। কখনও জটিলতা দেখানো হচ্ছে, একই সঙ্গে উঠে আসছে মেয়েটি প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে কীভাবে লড়াই করবে। তার সঙ্গে জুড়েছে বাকিদের সাহায্য পাওয়া। যেটা দর্শকের ভাল লাগছে।”
সিরিয়ালের পাশাপাশি সিরিজেও অভিনয় করছেন মানালিয সম্প্রতি ‘গোরা সিজন টু’-তে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর বক্তব্য, “এটা খুব স্পেশ্যাল হয়ে থাকবে, এরকম চরিত্রে আমি জীবনেও করিনি। সাহানাদিকে ধন্যবাদ যে, এমন চরিত্রে আমাকে ভেবেছে। সিরিজ এবং টিভিতে আপাতত ব্যালান্স করার চেষ্টা করব। এটুকুই বলব।” সিনেমা আপনাকে অতটা আপন করল না। তার জন্য অভিমান হয়? “না, হয় না। আমি খুব ব্লেসড যে নন্দিতাদি-শিবুদাদের ‘গোত্র’ করার সুযোগ পেয়েছি। অ্যাজ আ লিড বড়পর্দায় এসেছি। এখন টেলিভিশনে লিড করছি। আমি সিরিজ করছি, যেটা মানুষের ভাল লাগছে। অভিনেত্রী হিসাবে মানুষ ভালবাসছে। ভাল ছবি করতে কার না ভাল লাগে?” বলে হেসে ফোন রাখলেন অভিনেত্রী।