সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘সহজ পাঠের গপ্পো’। বাংলার ছেলের আনকোরা এক ছবি সারা বিশ্বের মন জয় করেছিল। পেয়েছিল জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু তারপর? তারপর প্রায় ছ’বছর হতে চলল। এখনও দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করে উঠতে পারেননি পরিচালক মানস মুকুল পাল (Manas Mukul Pal)। কেন? সেকথাই জানালেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জাতীয় পুরস্কারজয়ী ছবির পরিচালক। কলকাতার প্রায় প্রত্যেকটা প্রযোজনা সংস্থা থেকেই ছবি তৈরি করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন মানস। বারাসতের যুবকের মনে তখন বিপ্লবী দীনেশ গুপ্ত। তাঁকে নিয়েই ছবি তৈরি করবেন। যত টাকা লাগে লাগুক। অপেক্ষা করতে হলে করবেন। এই সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। “আমাদের বাংলা ছবি কেন পিছিয়ে থাকবে? কেন আমরা একটা ‘গান্ধী’ কিংবা ‘সিন্ডলার্স লিস্ট’ এর মতো ছবি তৈরি করতে পারব না?” ভেবেছিলেন মানস।
[আরও পড়ুন: চাঁদে জমি কিনলেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র! সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন চুক্তিপত্র]
কিন্তু ভাবলেই তো আর হল না। প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে তরুণ পরিচালককে। শুধু টাকার জন্য নয়, কখনও প্রকৃতির সঙ্গে, কখনও আবার নিয়তির সঙ্গে। পরিচালকের কথায়, “ভয় যে পাইনি, তেমনটা নয়। কিন্তু কখনও এক মুহূর্তের জন্যও পিছিয়ে আসিনি। জেদের বশে একের পর এক ছবির অফার ছাড়তে থেকেছি। লক্ষ্য একটাই – দীনেশের বায়োপিক বানানো – এক আকাশ ছোঁয়া স্কেলে! অবশেষে তিলে তিলে লক্ষ্যে পৌঁছালাম। ২০২০। শুটিং শুরু হওয়ার চারদিন আগে হঠাৎ লকডাউন। শুটিং বন্ধ হয়ে গেল অনির্দিষ্ট কালের জন্য। কোভিডের জেরে চাকরি হারিয়ে সরে দাঁড়ালেন প্রযোজক। ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকার সেট মেটিরিয়াল আমফানে নষ্ট হয়ে গেছে। তার চেয়েও বড় ক্ষতি একটি বিশেষ চরিত্রের অভিনেতা সৌমিত্র বাবুর মৃত্যু। ২০২১-এ আবার নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করা হল। কিন্তু পুনরায় লকডাউন। ২০২২-এ চূড়ান্ত অনভিপ্রেত সব চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেলাম।”
এই চেষ্টার মধ্যেও ধেয়ে আসত প্রশ্ন। সবাই তো ছবি তৈরি করছে, আপনি কেন করছেন না? খারাপ তো লাগে। মানসের হাসিমুখের আড়ালেও কষ্ট লুকিয়ে ছিল। কিন্তু হাল ছাড়েননি পরিচালক। চাননি অন্যান্য ছবির ভিড়ে তাঁর ছবি হারিয়ে যাক। অচিরেই জেদের কাছে হার মানল যন্ত্রণা। আবার আশার আলো দেখা গিয়েছে। মানসের আশা, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরই দীনেশ গুপ্তর ছবির কাজ শুরু করে দেবেন। “আপনারা যাঁরা প্রতিনিয়ত খোঁজ নিয়েছেন, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। দীর্ঘ বছর ধরে দাঁত কামড়ে লড়ে যাওয়ার জন্য এই নিঃশর্ত ভালবাসা নিঃশব্দে রসদ জুগিয়ে যায়”, লেখেন পরিচালক।