ম্যাঞ্চেস্টার সিটি: ১ (রড্রি)
ইন্টার মিলান: ০
স্টাফ রিপোর্টার: ৬৮ মিনিটে রড্রির গোলার মতো শটটা যখন ইন্টার মিলানের জালে জড়িয়ে গেল, তখন কি দুই বছর আগের এমনই এক ফাইনালের স্মৃতি ভেসে ওঠেনি পেপ গুয়ার্দিওলার (Pep Guardiola) মানসপটে? সেবার চেলসির বিরুদ্ধে প্রথম একাদশ নির্বাচনে একটা চমক দিয়েছিলেন এই স্প্যানিশ কোচ। দলে রাখেননি রড্রিকে। অবশ্য শুধু রড্রি কেন, কোনও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ছাড়াই টমাস টুখেলের চেলসির (Chelsea) মহড়া নিতে নেমেছিল পেপের ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। আর সেদিন সিটির হারের পর বারবার আলোচনায় এসেছিল পেপের এই ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্তের কথা।
শনিবার রাতে ইস্তানবুলে ইন্টারের (Inter Milan) বিরুদ্ধে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেননি পেপ। তবে শুরু থেকে যেভাবে গুটিয়ে ছিলেন সিটিজেনরা, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন সমর্থকরা। ক্রমেই আক্রমণে লোক বাড়াচ্ছে ইন্টার, অনেকটা নীচে নেমে এসে খেলতে বাধ্য হচ্ছেন এর্লিং হালান্ড! সাম্প্রতিক সময়ে এমন পরিস্থিতি খুব একটা দেখা যায়নি সিটির (Manchester City) ম্যাচে। তবে কি আরও একবার শেষ ল্যাপে এসে পদস্খলন হবে সিটির? অধরা মাধুরীর জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে পেপকে? পাঠকের মনে হতেই পারে বার্সেলোনার হেডস্যর হয়ে দু-দু’টো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ রয়েছে যাঁর, তার জন্য এই ট্রফি কীভাবে অধরা মাধুরী হতে পারে? আসলে বার্সা ছাড়ার পর এক যুগ কেটে গেলেও আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দেখা পাননি পেপ। তারকাখচিত বায়ার্ন মিউনিখ হোক বা বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ম্যান সিটি-সব সাফল্যের মধ্যেও কাঁটা হয়ে বিধেছে এই একটা তথ্য। নিন্দুকরা আড়ালে নয়, রীতিমতো প্রকাশ্যেই বলা শুরু করেছিল যে পেপের যাবতীয় দাদাগিরি বার্সার সোনালী প্রজন্মের অবদান।
[আরও পড়ুন: ঔরঙ্গজেবের প্রশংসা করে ভিডিও পোস্ট, মহারাষ্ট্রে ১৪ বছরের কিশোরের বিরুদ্ধে FIR]
কিন্তু সব সমালোচনা শনিবাসরীয় রাতে ভেসে গেল বসফরাস প্রণালীর জলে। ভাসিয়ে দিলেন পেপ, তাঁর আপাত দুর্বোধ্য স্ট্র্যাটেজিতে। আপাত দুর্বোধ্যই বটে। না হলে প্রথমার্ধে যে সিটিকে দেখে মনে হচ্ছিল গুটিয়ে রয়েছে, দ্বিতীয়ার্ধে তারাই ঝড় তুলল আক্রমণের। মাথায় রাখবেন, প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে চোট পেয়ে উঠে গিয়েছেন সিটি মিডফিল্ডের হৃদপিন্ড কেভিন ডে ব্রুইন। তারপরও বারবার জ্বলে উঠল সিটি। রড্রির গোলটা তারই ফসল। সুযোগ পেয়েছিল ইন্টারও, তবে কখনও এডেরসনের বিশ্বস্ত হাত ঠেকাল সিটির পতন। আবার কখনও মার্টিনেজ-লুকাকুর ব্যর্থতায় পিছিয়ে পড়ল ইটালির দলটি।
[আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়িতে একরাত কাটিয়েই স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ‘আইনের অপব্যবহার’, বলল আদালত]
দু’বছর আগেই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা জিততে পারত সিটি। তবে এবারের জয়টা আরও মধুর, আরও স্মরণীয় ‘সিটিজেন’দের জন্য। কারণ এই ট্রফির সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় দল হিসাবে ‘ট্রেবল’ জিতে ফেলল সিটি, তাও আবার আরেক ‘ট্রেবল’জয়ী ক্লাব ইন্টারকে হারিয়ে। প্রথম কোচ হিসাবে দু’বার ‘ট্রেবল’ জেতার বিরল নজির গড়লেন পেপ, তাও আবার দু’টো ভিন্ন ক্লাবের হয়ে। তাঁর অপেক্ষার ফল হয়তো এভাবেই দিলেন ফুটবল ঈশ্বর! কে বলে ফুটবলে রূপকথা তৈরি হয় না?