অর্ণব আইচ: টেট দুর্নীতির তদন্তে নেমে একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসছে ইডির (ED)। ১৫টি যুগ্ম ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নাকি টেট দুর্নীতির কোটি টাকা সরানো হত, জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দশ বছরে ৫৮ হাজার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগ করেছে পর্ষদ। ওই সময়ই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁদের মধ্যে কতজন টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, এবার তা খতিয়ে দেখছে ইডি। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথায় ও কীভাবে সরানো হয়েছে, সেই ব্যাপারে শুরু হয়েছে তদন্ত।
ইডির দাবি, চাকরি বিক্রির টাকা সরাতেই মানিক ভট্টাচার্যের মদতে বহু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়। আপাতত ১৫টি অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেলেও ইডির মতে, এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০ ছাড়াতে পারে। সল্টলেকের মহিষবাথানে মানিক ভট্টাচার্যর একটি অফিসের সন্ধান পেয়েছে ইডি। ওই অফিসটি ‘দুর্নীতির আঁতুড়ঘর’ বলে দাবি তদন্তকারী আধিকারিকদের। একইসঙ্গে, টেট দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আরও কয়েকজনের নামের তালিকা তৈরি করছে ইডি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থী থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর কয়েকজন আত্মীয় ও পরিচিতরা। এ ছাড়াও যে বেসরকারি কলেজগুলির কাছ থেকে মানিকবাবুর ছেলের অ্যাকাউন্টে প্রায় আড়াই কোটি টাকা জমা হয়েছে, সেই কলেজের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন ইডি আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: ‘ভাঁওতাবাজির চেয়ে ভাঁড়ামো অনেক ভাল’, বৈশাখীর নিশানায় শুভেন্দু, শোভনকে ‘ভাঁড়’ কটাক্ষের পালটা]
ইডির অভিযোগ, টেট দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ টাকা সরাতেই মানিক ভট্টাচার্য একাধিক ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করেন। ওই অ্যাকাউন্টগুলি তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও বাইরের কয়েকজনের সঙ্গে যুগ্মভাবে তৈরি করা হয়। ওই যুগ্ম ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি পরিবারের লোকেদের বাইরেও যাঁদের নামে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই মানিকবাবুর ঘনিষ্ঠ। তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের তলব করবে ইডি।
ইতিমধ্যে ২৭৩ জন ভুয়ো প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। একটি সিডিতে ৬১ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে, যাঁদের মধ্যে ৫৫ জন টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের নামের তালিকা অনুযায়ী তলব করে জেরা করা হবে। যে ৫৩০টি বেসরকারি কলেজের সঙ্গে মানিকবাবুর ছেলে সৌরভ ভট্টাচার্যর ছেলের সংস্থার চুক্তি হয়, সেই সংস্থার কর্ণধারদের কাছে ইডি জানবে, কলেজের প্রযুক্তিগত উন্নতির নামে তাঁরা একেকজন ৫০ হাজার টাকার বদলে আরও কোনও টাকা দিয়েছেন কি না। ছেলের সংস্থার সঙ্গে কলেজগুলির যোগসূত্র কী ও মানিকবাবু কীভাবে যুক্ত, তাও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি।