সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নয়ের দশকে এক বীভৎস অধ্যায়ের সাক্ষী হয় জম্মু ও কাশ্মীরে। প্রায় তিন দশক পরে মণিপুরে যেন তারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে। জাতিদাঙ্গার জেরে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতোই আজ স্বভূমিতে ‘রিফিউজি’ অন্তত ৫০ হাজার মণিপুরী।
রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মণিপুর থেকে সাংসদ আর কে রঞ্জন জানান, হিংসার জেরে ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। রাজ্যের ৩৪৯টি রিলিফ ক্যাম্পে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, জঙ্গিদের খোঁজে রাজ্যজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, অসম রাইফেলস, আধাসেনা ও রাজ্য পুলিশ। সাম্প্রতিক চিরুনি তল্লাশিতে ৫৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৯টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, দাঙ্গায় ঘরছাড়া পড়ুয়াদের শিক্ষার কথা মাথায় রেখে একটি নকশা তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই তা ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঞ্জন।
[আরও পড়ুন: পরপর দুই রাজ্যে ব্যর্থ, লোকসভা ভোটের ১ বছর আগেই দেশজুড়ে সংগঠনে ঝাঁকুনি বিজেপির]
এদিকে, হিংসার জেরে রাজ্যে পণ্য পরিবহণ ব্যাহত হয়েছে রাজ্যে। ফলে জ্বালানি থেকে শুরু করে খাদ্যসামগ্রীর জোগান রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে। মওকা বুঝে কালোবাজারিও তুঙ্গে। বাজার কার্যত আগুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল নিশ্চিত করছে সেনা।
উল্লেখ্য, ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই ছিল এই মিছিল। ক্রমেই তা হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মেতেই সংখ্যাগুরু ইম্ফল উপত্যকায় বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আর এর প্রতিক্রিয়াও হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।
এহেন পরিস্থিতিতে, গত মাসেই দিল্লিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘ওয়ার্ল্ড মেতেই কাউন্সিল’। তাদের দাবি, মণিপুরে (Manipur) যে সমস্ত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে তা পূর্বপরিকল্পিত। আজ মেতেইদের দশা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতোই। অথছ, মেতেই এবং নাগারাই মণিপুরের ভূমিপুত্র। নিজের রাজ্যেই তারা গণহত্যার মুখে দাঁড়িয়ে।