সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ভোটের আগে তৃণমূলের তৈরি বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের নাম জড়িয়ে দেওয়াল লিখন ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। এই ঘটনা জেলার রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এল। যদিও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেওয়াল লিখন মুছে দিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক চাপানউতোর তাতে কমছে না কিছুতেই। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তার তদন্তে নেমেছে বিনপুর থানার পুলিশ।
দিন পাঁচেক আগে বিনপুর থানার এড়গোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহুলবনি গ্রামের এক বাড়িতে দেওয়াল লিখন চোখে পড়ে সকলের। সেখানে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি সভাপতি সুখময় শতপথী-সহ জেলা বিজেপির ৬ নেতার নাম উল্লেখ করা। হুমকি দিয়ে লেখা, আগামী ৮ দিনের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। জেলা বিজেপির নেতা বাবলু সোরেনের উপর সেই টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দেওয়াল লিখনের শেষে লেখা – তোমার জয় হিন্দ বাহিনী (এমসিসি/মাওবাদী)।
[আরও পড়ুন: মণ্ডপে তারস্বরে বাজছে গান ‘খেলা হবে’! সরস্বতী পুজোতেই ভোটের দামামা কুলটিতে]
আর এখানেই খটকা। কোনও পোস্টার কিংবা দেওয়াল লিখনের পর মাওবাদীদের (Maoist) স্বাক্ষর সাধারণত থাকে – সিপিআই (মাওবাদী)। কিন্তু মহুলবনির দেওয়ালে কেন জয় হিন্দ বাহিনীর নাম? প্রসঙ্গত, এই জয় হিন্দ বাহিনী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের নামকরণ, বিজেপির হাত থেকে এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে এই বাহিনী গঠনের কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তার সঙ্গে মাওবাদীদের নাম জুড়ল কীভাবে? এই প্রশ্নেই এখন সরগরম মহুলবনি গ্রাম। পুলিশের মতে, এর সঙ্গে আসল মাওবাদীদের কোনও যোগ নেই। বেলপাহাড়ির এসডিপিও উত্তম গড়াই বলেন, ”আমাদের প্রাথমিক ধারণা, এই দেওয়াল লিখনের সঙ্গে মাওবাদীদের সম্পর্ক নেই। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, খোঁজ শুরু করেছি। বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: প্রেমপত্র আসবে না এবার, শূন্য তত্ত্বের ডালি, সরস্বতী পুজোয় বিষণ্ণতা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে]
বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক মহলের অবশ্য জোর তরজা চলছে। জেলা বিজেপি সভাপতি সুখময় শতপথীর প্রতিক্রিয়া, ”প্রাক্তন মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতো জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ভয়ের বাতাবরণ এলাকায়। তিনি ও তাঁর দলবল সন্ত্রস্ত করছেন মানুষজনকে। এটাও তাঁদেরই কাজ। আমাদের এভাবে মনোযোগ কাড়ার প্রয়োজন নেই। মানুষ বিজেপির সঙ্গে রয়েছে, লোকসভা ভোটেই তার প্রমাণ।” তাঁকে পালটা দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো বলছেন,”আমার দেওয়াল লিখন করার প্রয়োজন নেই। ২০১৪ থেকে যে বিজেপিতে ঢুকে রয়েছে, এখন বলছে, দেওয়ালও লিখতে পারে, এটা তারই কাজ। আদিবাসীদের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপির সঙ্গে মানুষ নেই, তা বোঝা গিয়েছে নাড্ডার সভার পরই। তাই এভাবে গিমিক তৈরির চেষ্টা চলছে।”