shono
Advertisement

কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতেই ভোট বয়কটের হুমকি মাওবাদীদের, অযোধ্যা পাহাড়ে মিলল পোস্টার

পোস্টারে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদের বার্তা।
Posted: 05:27 PM Feb 21, 2021Updated: 05:33 PM Feb 21, 2021

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) বাংলায় পা রাখতেই ভোট বয়কটের হুমকি দিয়ে পোস্টার পড়ল পুরুলিয়ার (Purulia) জঙ্গলমহলে। নির্বাচন ঘোষণার আগেই রবিবার সাতসকালে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির ঝালদার খামার এলাকা থেকে পোস্টারগুলি উদ্ধার করে পুলিশ। ঝালদা বনাঞ্চলের খামার বিট অফিসের বাইরে সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে লেখা একাধিক মাওবাদী পোস্টার দেখতে পান সাধারণ মানুষজন। তারপরই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। পরে ঝালদা থানার পুলিশ পোস্টারগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

Advertisement

মাওবাদীদের (Maoist) পোস্টারে শুধু ভোট বয়কটের ডাকই দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি একদা মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রমকে গ্রেপ্তারের পিছনে যে প্রাক্তন মাওবাদী তথা বর্তমানে স্পেশ্যাল হোমগার্ড পদে কর্মরত পুলিশকর্মীর ভূমিকা ছিল, তাঁকেও পোস্টারে নিশানা করেছে মাওবাদীরা। সেইসঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে পেট্রল-ডিজেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং কৃষি আইন বাতিল করার দাবিও তুলেছে তারা। তবে এই পোস্টারগুলি মাওবাদীদেরই কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, “এই ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: ‘বাহিনী থাকবে বুথে, খেলা হবে মাঠে’, ভাঙড়ের তৃণমূল নেতার মন্তব্যে জোর বিতর্ক

পোস্টারগুলি উদ্ধারের পরই জঙ্গলমহলের ওই এলাকায় তল্লাশিও শুরু করেছে পুলিশ। রাজ্যে আপাতত যে ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে, তার মধ্যে পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে সবচেয়ে বেশি ন’ কোম্পানি করে ওই বাহিনীর সিআরপিএফ মোতায়েন করা হবে বলে খবর। তবে এই জেলায় এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী পা রাখেনি। গত নভেম্বর মাসের একেবারে শেষে মাওবাদীদের গণমুক্তি গেরিলা ফৌজ সপ্তাহের সময় মাওবাদী পোস্টার মেলে পুরুলিয়ায়। তারপর এই ঝালদা থানার খামারেই জানুয়ারি মাসের গোড়ায় একাধিক সিপিএম নেতা, ঠিকাদারকে নিশানা করে মাও পোস্টার মেলে। এবার বনদপ্তরের খামার বিটের দেওয়াল থেকে যে পাঁচটি পোস্টার উদ্ধার হয়, তাতে ভোট বয়কটের কথা লেখা থাকলেও ‘বয়কট’ বানান ভুল। এছাড়া বাকি পোস্টারে বিক্রমকে ধরার জন্য পেলারাম সোরেনকে যেমনকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, তেমনই উল্লেখযোগ্য ভাবে গ্যাস-পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, কৃষি আইন বাতিল, স্কুল-কলেজ চালু ও প্রকৃত মাওবাদীদের কর্মসংস্থানের দাবি রয়েছে পোস্টারে। জঙ্গলমহলের মানুষ যাতে রেশন পেতে সমস্যায় না পড়েন সে কথাও পোস্টারে রয়েছে।

[আরও পড়ুন: পুরনো আক্রোশের জেরে প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুন! চাঞ্চল্য মুর্শিদাবাদে]

গত ডিসেম্বরে প্রাক্তন মাওবাদীরা ঝাড়খণ্ড সীমানা বরাবাজারের বেড়াদায় বৈঠক করে জানিয়েছিল, তারা রাজ্য সরকারের ঘোষণা মত চাকরি না পেলে নিজেদের মতো করে বুঝে নেবেন। এরপর কয়েকদিন আগে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনিক ভবনে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে তারা চাকরির দাবি জানান। সেইসঙ্গে হুমকি দেয়, চাকরি না পেলে তারা আবার পুরনো দলে ফিরে যাবেন। গত শুক্রবারও অযোধ্যা পাহাড়ের আড়শার ধানচাটানিতে বৈঠক করে তারা চাকরির দাবিতে সরব হন। সেই বৈঠকের দু’দিনের মাথাতেই এই পোস্টারকে ঘিরে নানান প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে প্রকৃত মাওবাদীদের কর্মসংস্থানের কথা পোস্টারে লেখা থাকাতে সন্দেহের উর্দ্ধে নন তারাওl তবে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সবকিছু খতিয়ে দেখছে।

ছবি ও ভিডিও: অমিত সিং দেও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement