সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়েরা একদিন শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে, ফলে পরের ধন। এককালে এমন মন্তব্য প্রচলিত ছিল ভারতীয় সমাজে। কিন্তু যুগ বদলেছে। মহিলারা এখন পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজ, সভ্যতাকে দু’কদম এগিয়ে দেওয়ার কাজ করেন। লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে কড়া আইনও হয়েছে। সেনার ওয়ালফেয়ার বোর্ডকে সেকথা স্মরণ করে দিল কর্ণাটক হাই কোর্ট (Karnataka High Court)। একটি মামলায় বিচারপতিরা মন্তব্য করলেন, বিবাহিত বটে, তাই বলে পর নয় মেয়ে। ফলে সৈনিক বাবার অবর্তমানে সেনার ‘ডিপন্ডেন্ট কার্ডে’র সুবিধা পেতে পারেন তিনি। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে আদালত।
মামলটি করেন প্রিয়াঙ্কা পাতিল। ২০০১ সালে ‘অপরেশন পরাক্রম’ চলাকালীন প্রয়াত হন প্রিয়াঙ্কার বাবা সুবেদার রমেশ খাণ্ডাপ্পা পাটিল। সেই সময় প্রিয়াঙ্কার বয়স ছিল বছর দশেক। ২০২১ সালে সেনার ওয়ালফেয়ার বোর্ডের কাছে ‘ডিপন্ডেন্ট কার্ডে’র দাবি জানান প্রিয়াঙ্কা। এই কার্ডের সাহায্য চিকিৎসা, নিয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা মেলে। যদিও ওয়ালফেয়ার বোর্ড প্রিয়াঙ্কার দাবি নস্যাৎ করে। যেহেতু তিনি বিবাহিত ফলে বাবার উপরে নির্ভরশীল নন, ফলে ‘ডিপন্ডেন্ট কার্ডে’র দাবিদারও নন।
[আরও পড়ুন: বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন অঞ্জলি, দিল্লির তরুণীর মৃত্যুতে অকূল পাথারে পরিবার]
এই যুক্তি খারিজ করল কর্ণাটক হাই কোর্ট। ২ জানুয়ারি এই মামলায় প্রিয়াঙ্কার পাটিলের দাবির পক্ষে নির্দেশিকা জারি করেছে আদালত। বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্নর পর্যবেক্ষণ, বিয়ের পর যদি ছেলে বাপ-মায়ের সন্তানই থাকে, তবে মেয়ে পর হবে কেন। সে বিবাহিত হোক কিংবা অবিবাহিত। আরও বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ‘এক্সসার্ভিসম্যান’ বলাও বন্ধ হওয়া উচিত। পরিবর্তে লিঙ্গসমতা আছে এমন কোনও শব্দের করা উচিত।”
[আরও পড়ুন: ২৫ বছরের মধ্যেই ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হবে ভারত! দাবি প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টার]
একত্রিশ বছরের প্রিয়াঙ্কা জানান, তিনি নায্য কারণে বাবার অবর্তমানে ডিপেন্ডেট কার্ড চেয়েছেন। এর ফলে সরকারি কলেজে নিয়োগে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ পাওয়া যাবে। আদালতের বক্তব্য, সেনার ওয়ালফেয়ার বোর্ড মামলাকারীর দাবিকে অস্বীকার করে কার্যত সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা সমান অধিকার লঙ্ঘন করেছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সেনার ওয়ালফেয়ার বোর্ডের ভাবনাকে মেনে নিলে কার্যত মেয়েদের অধিকারের বিষয়ে পিছনে হাঁটতে হয় সমাজকে।