সুদীপ রায়চৌধুরী: আরএসএসের (RSS) রাজ্য সংগঠনে বড়সড় বদল। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসের সংগঠনের দায়িত্বে এলেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায় (Subrata Chatterjee)। তাঁকে ক্ষেত্র প্রচার প্রমুখের দায়িত্ব দেওয়া হল। নতুন দায়িত্ব পেলেন বিদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়ও। শনিবার কেশব ভবনের একটি বৈঠকে এই রদবদলের কথা ঘোষণা করলেন ক্ষেত্র সংঘচালক অজয়কুমার নন্দী। প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বরাবরই সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ভাল। তিনি আরএসএসের সংগঠনে আসায় বিজেপির অন্দরে ফের দিলীপ ঘোষের জোর আরও বাড়ল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর রাজ্য বিজেপিতে যুগ্ম সংগঠন সম্পাদক হিসাবে সুব্রতবাবুর প্রবেশ। পরবর্তীকালে অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে সড়িয়ে তাঁকে দলের রাজ্য সংগঠনের পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির নজিরবিহীন সাফল্যের পিছনে মুকুল রায়ের রাজনৈতিক কৌশলের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এই দিলীপ-সুব্রত জুটির রসায়ন। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনেও দলকে সাফল্য এনে দিয়েছিল এই ত্রয়ী। কিন্তু সেই একই সময় থেকে বিজেপি তথা সংঘের ভাবধারায় অনভ্যস্ত মুকুল রায়ের সঙ্গে দিলীপ-সুব্রত জুটির মতোবিরোধ বাঁধতে শুরু করে।
[আরও পড়ুন: বিয়ের আসরে পুলিশের হানা, জানলা দিয়ে বউ পালাল, সঙ্গে বরও!]
বস্তুত দিলীপ-সুব্রত জুটিকে এড়াতে মুরলীধর সেন লেনের বদলে এলগিন রোডে নিজের বাড়িতে পৃথক ওয়ার রুম তৈরি করে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন পরিচালনা করেন মুকুল। পাশে পান কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। দলীয় সূত্রে খবর, মুকুল গোষ্ঠীর সঙ্গে এই বিরোধের জেরেই ২০২০-র অক্টোবর মাসে রাজ্য বিজেপি থেকে সরতে হয় সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। এই অপসারণ নিয়ে তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আপত্তি থাকলেও তা ধোপে টেকেনি।
আরএসএসের প্রচারক হিসাবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসা সুব্রতবাবু আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি রীতিমতো সড়গড়। রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিচালন ব্যবস্থাকে ‘ডিজিটালাইজড’ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তাঁরই উদ্যোগে। কেশব ভবন সূত্রে খবর, বিজেপি থেকে সরানোর পর সংঘের পক্ষ থেকে সীমান্ত সংক্রান্ত শাখা ‘সীমান্ত সুরক্ষা মঞ্চ’-এর রাজ্য সংযোজকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুব্রতবাবুকে। কিন্তু সেই দায়িত্ব নিতে তিনি রাজি হননি।
২০১৫-এ একে একে দিলীপ ঘোষ ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বিজেপিতে পাঠানোর সময় আরএসএসের দক্ষিণবঙ্গের প্রান্ত প্রচারক ছিলেন বিদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়। পরবর্তী কালে তাঁকেও সরিয়ে সেই পদে আনা হয় জলধর মাহাতোকে। মাস চারেক আগে বিদ্যুৎবাবুকে পূর্বভারতীয় ক্ষেত্রের সম্পর্ক প্রমুখের দায়িত্বে আনা হয়েছে। এবার নতুন দায়িত্বে আনা হল সুব্রতবাবুকেও।