সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: হজ কমিটিতে (Haj Committee) এবার বিজেপি নেতানেত্রীর আধিক্য। কয়েকবছর পর ওই কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সেখানে চেয়ারম্যান করা হয়েছে কেরলের বিজেপি নেতা আবদুল্লা কুট্টিকে। যিনি একদা সিপিএমের সাংসদ ছিলেন। আর ওই কমিটিতে এই প্রথম স্থান পেলেন দুই মহিলা, যাঁদের মধ্যে একজন এই রাজ্যের। তিনি হলেন মুর্শিদাবাদের মাফুজা খাতুন, যিনি বিজেপির হয়ে লোকসভা ভোটে লড়ে হেরেছেন। তাঁকে ভাইস চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। আর একজন হলেন তামিলনাড়ুর বিজেপি নেত্রী মুন্নাওরি বেগম। পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটির চেয়ারম্যান, রাজ্যসভার সাংসদ মহম্মদ নাদিমুল হক আগে এই কমিটিতে পূর্বাঞ্চলের নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ক্ষমতাবলে মনোনীত সদস্য হিসাবে জায়গা পেলেন মাফুজা খাতুন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় হজ কমিটির প্রতিনিধিত্ব দু’ভাবে করা যায়। কিছু মনোনীত সদস্য থাকেন। কিছু নির্বাচিত।
জানা গিয়েছে, করোনা আবহের কারণে সৌদি (Saudi Arab) হজ মন্ত্রক এবার হজের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৫ নির্ধারণ করার ফলে অনেকেই যাত্রা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ বছর দেশের ১০টি বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৮০ হাজার ভারতীয় ৩১ মে থেকে সৌদির উদ্দেশে রওনা দেবেন। এই তথ্য দিয়ে আদতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা, একদা পঞ্চায়েত প্রধান মাফুজা খাতুন (Mafuja Khatun) বলেন, “সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। আগামী দিনগুলিতে হজ যাত্রী যাতে আরও সহজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হজে যেতে পারেন সেই দিকগুলি খতিয়ে দেখা হবে। অন্যদিকে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলিতে হজ সংক্রান্ত কেন্দ্র খোলার ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করা হবে।”
[আরও পড়ুন: বগটুইয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে মামলা, রাজ্যের কাছে জবাব তলব করল হাই কোর্ট]
কেরলের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী মুলাপল্লী রামচন্দ্রন কান্নুর থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়ালে তাঁকে পরপর দু’বার হারিয়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া নাম ছিল সিপিএমের আবদুল্লা কুট্টি। ২০০৯ সালে নরেন্দ্র মোদির গুজরাত মডেলকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়ে বহিষ্কৃত হওয়া কুট্টি বছর চারেক আগে তাঁর নৌকা ভেড়ান সেই গেরুয়া শিবিরেই। দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতিকে এবার হজ কমিটি অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান করে পুরস্কার দেওয়া হল বলেই মনে করছেন অনেকে।
এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের দু’বারের সিপিএম বিধায়ক মাফুজা খাতুন ২০১৭ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ছ’মাসের মধ্যে রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সহসভাপতি হন। পরে লোকসভা ভোটে লড়েন জঙ্গিপুর কেন্দ্র থেকে। বিধানসভাতেও সাগরদিঘিতে তাঁকে প্রার্থী করেছিল পদ্মশিবির। এবার তাঁকে হজ কমিটির ভাইস চেয়ারপার্সন করল কেন্দ্র।
যে কমিটি হজযাত্রার বিষয়গুলি দেখে। জেড্ডার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। সংখ্যালঘু মন্ত্রক, বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয়সাধনের কাজও এই কমিটির। সেখানে কোনও জনপ্রতিনিধি না রেখে দলীয় নেত্রীর অন্তর্ভুক্তিতে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তবে মাফুজা এনিয়ে মন্তব্য করেননি। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কমিটির সদস্য নির্বাচন করা হয়। মাফুজার ক্ষেত্রে সেগুলি মিলে গিয়েছে। এই মনোনয়নে বিতর্ক নেই।