সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মীরাটের পুলিশ সুপারের ‘পাকিস্তানে চলে যাও’ মন্তব্য ঘিরে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। একজন পুলিশ সুপার কীভাবে কোনও ব্যক্তিকে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলতে পারেন, উঠছে সেই প্রশ্ন। তবে তার মাঝে নিজের মন্তব্য সমর্থন করে সাফাই দিলেন পুলিশ সুপার। দেশবিরোধী মন্তব্য যারা করছে তাদের একথা বলে ভুল করেননি বলেই দাবি তাঁর। পুলিশ সুপারের পাশে দাঁড়িয়েছেন এডিজিও। বিক্ষোভের মাঝেও পুলিশ আধিকারিকরা যথেষ্ট ধৈর্যশীল বলেই দাবি শীর্ষ পুলিশকর্তার।
সম্প্রতি মীরাটের পুলিশ সুপার অখিলেশ নারায়ণ সিংয়ের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। যাতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকজন মুসলমান যুবকের সামনে ওই পুলিশ আধিকারিক বলছেন, “এদেশে থাকতে মন না চাইলে পাকিস্তানে চলে যাও।” এই ভিডিও ঘিরে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। নকভি বলেন, “এই ভিডিও সত্যি হলে ঘটনাটি নিন্দনীয়। CAA বিরোধী আন্দোলন প্রশমন করতে গিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়। সহিংস আন্দোলন কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে হিংসা থামাতে গিয়ে পুলিশকেও খেয়াল রাখতে হবে কোনও ভুল মন্তব্য করা চলবে না। মীরাটের পুলিশ সুপার একথা বলে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” শুধু নকভি নয় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-সহ একাধিক নেতানেত্রী মীরাটের পুলিশ সুপারের ‘পাকিস্তানে চলে যাও’ মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। একজন পুলিশ আধিকারিক কাউকে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলতে পারেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশের ব্যবহারে রীতিমতো ক্ষুব্ধ অখিলেশ যাদব এবং আসাউদ্দিন ওয়েইসি। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর নির্মম অত্যাচার করেছে বলেও অভিযোগ করছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘বিশৃঙ্খলা ও স্বজনপোষণ যুবসমাজের অপছন্দের জিনিস’, বর্ষশেষের ‘মন কি বাতে’ মন্তব্য মোদির]
রাজনীতিকরা সমালোচনার সুর চড়ালেও তাতে কিছু যায় আসে না মীরাটের পুলিশ সুপারের। পরিবর্তে নিজের মন্তব্যের সমর্থনে সাফাই দেন অখিলেশ নারায়ণ সিং। তাঁর দাবি, বেশ কয়েকজন যুবক পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। তাই তাদের উদ্দেশে একথা বলেছেন তিনি। পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ”পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিলে সেখানেই চলে যাও বলেছি। এতে ভুল কী করেছি?”
মীরাটের পুলিশ সুপারের পাশে দাঁড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এডিজি প্রশান্ত কুমার বলেন, ”পাথর ছোঁড়া হয়েছে। পাকিস্তানের হয়ে স্লোগান দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি খুব খারাপ। ধর্মীয় নেতাদের আবেদনেও সাড়া দেয়নি বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুলিশ সুপার একথা বলতেন না। আধিকারিকরা যথেষ্ট ধৈর্যশীল। এত বিক্ষোভের মাঝেও তাঁরা গুলি চালাননি।”
এদিকে, CAA বিরোধী আন্দোলনের পর এখনও থমথমে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলা। বিভিন্ন জায়গায় ব্যাহত ইন্টারনেট পরিষেবা। অশান্তি করার অভিযোগে এখনও জারি পুলিশি ধরপাকড়।
The post ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান শুনে চলে যাওয়ার নির্দেশ, সাফাই মীরাটের পুলিশ সুপারের appeared first on Sangbad Pratidin.