shono
Advertisement

লকডাউনে হাজার কিমি পেরিয়ে কলকাতায় অন্তঃসত্ত্বা, হ্যাম রেডিওর চেষ্টা ফিরে পেলেন পরিবার

লকডাউনে এতটা রাস্তা কীভাবে পেরলেন তিনি, এখনও রহস্য।
Posted: 07:47 PM Nov 04, 2020Updated: 10:59 PM Nov 04, 2020

গৌতম ব্রহ্ম: করোনা আবহ। বাস-ট্রেন বন্ধ। তার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর থেকে সটান কলকাতা (Kolkata) চলে এলেন এক অন্তঃসত্ত্বা। বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন মাস তিনেক আগে। সম্প্রতি বিরাটির গৌরীপুর অঞ্চল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ।
অসুস্থ শরীরে কীভাবে পেরোলেন ১০৯১ কিমি রাস্তা?
নিরুত্তর সেই অন্তঃসত্ত্বা। বাবা ছাড়া আর কারও নাম মনেও করতে পারছেন না। তবে ছবি দেখে মা ও স্বামীকে চিনতে পেরেছেন।

Advertisement

সরস্বতী কুমার। আদালতের নির্দেশে ২৯ বছরের এই তরুণী এখন রাজারহাটের একটি হোমে। প্রথমে হোমের লোকজন বুঝতে পারেননি সরস্বতী অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করায় হোমের মহিলাদের সন্দেহ হয়। সরস্বতী পেটের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। তারপরই পরীক্ষা করে প্রেগন্যান্সির বিষয়ে নিশ্চিত হন হোম কতৃর্পক্ষ। শুরু হয় দুশ্চিন্তা। প্রসবের দিন এগিয়ে আসছে, অথচ বাড়ির কারও খোঁজ নেই। বাধ্য হয়েই হোম কর্তৃপক্ষ হ্যাম রেডিও (HAM Radio) অপারেটরদের শরণাপন্ন হয়। তাতেই হয় মুশকিল আসান।

[আরও পড়ুন : বিজেপির বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ধুন্ধুমার, গ্রেপ্তার শতাধিক কর্মী]

রেডিও অপারেটররা তাঁদের নেটওয়ার্ক মারফৎ জানতে পারেন, সরস্বতীর বাবা বিজয় হেলা ক্যানিং হাসপাতালের সাফাইকর্মী ছিলেন। ষোল বছর আগে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান। মা অগ্নি হেলা এখন ওই ক্যানিং হাসপাতালেই কাজ করেন। চুক্তির ভিত্তিতে। মেয়ের ছবি দেখে চিনতে পারেন মা। কিন্তু এখানেও সমস্যা। মা নিজে মূক, বধির। অনেক কষ্টে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে জানা যায়, সরস্বতীর শ্বশুরবাড়ি উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে। সীতাপুরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মহিলা ওই পুলিশ আধিকারিকের উদ্যোগেই খুঁজে বের করা হয় সরস্বতীর স্বামী সুধীর কুমারকে। তাঁর থেকেই জানা যায়, ২০১৯ সালে সরস্বতীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পরেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন সরস্বতী। কিন্তু মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। মাঝেমধ্যেই বিড়বিড় করে কথা বলতেন নিজের মনে। মাস তিনেক আগে হঠাৎই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান সরস্বতী।

[আরও পড়ুন : ঢাকুরিয়া আমরির পুড়ে যাওয়া অংশে শুরু হচ্ছে কোভিড চিকিৎসা, জানাল স্বাস্থ্যদপ্তর]

স্থানীয় থানায় মিসিং ডায়েরি করেন সুধীর। কিন্তু স্ত্রীর কোনও সন্ধান মেলেনি। করোনা আবহে স্ত্রী হারিয়ে যাওয়ায় প্রবল বিপাকে পড়েন সুধীর কুমার। ইচ্ছে থাকলেও ডায়মণ্ডহারবারে শাশুড়ির কাছে আসতে পারেননি। হ্যাম রেডিওর পক্ষে অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানিয়েছেন, সরস্বতীর যেকোনও সময় প্রসব বেদনা উঠতে পারে। এই সময় বাড়ির লোকের সামনে থাকা খুব জরুরি। সরস্বতীর স্বামী বুধবার ট্রেনে উঠছেন। সীতাপুরের পুলিশ সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। পরশু রাতেই পৌঁছে যাবেন কলকাতা। কিন্তু কী ভাবে সীতাপুর থেকে ১০৯১ কিমি পেরিয়ে কলকাতা এলেন সরস্বতী?
উত্তর অজানা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement