সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”দেখতে চাই, একজন বাংলাদেশি ভারতে এসে যে কোনও প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে বসছেন।” সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে মুখ খুলে এই প্রতিক্রিয়াই দিলেন মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা (Satya Nadella)। সোমবার মাইক্রোসফটের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ”ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যে অশান্তি চলছে, তা আমার কাছে বেদনার। যা হচ্ছে, একদম ঠিক হচ্ছে না।” এরপরই তাঁর বক্তব্য, ”একজন বাংলাদেশি অভিবাসী ভারতে এসে নিজের পরিচয় তৈরি করবেন, ভারতের একজন বড় ব্যক্তিত্ব যেমন ধরা যাক ইনফোসিসের পরবর্তী সিইও হবেন, এটাই দেখতে চাই।”
আসলে সত্য নাদেলা নিজে মূলত হায়দরাবাদের তেলুগু পরিবারের ছেলে। পরবর্তী সময়ে তাঁর মার্কিন নাগরিত্ব এবং সেই সূত্রে কর্মজীবনের এত বড় উত্তরণ, নিজের সেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলনা করেই CAA নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর কথায়, ”আমি ভারতীয় সংস্কৃতি, বহুত্ববাদকে সঙ্গে নিয়ে বেড়ে উঠেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছি। ভারত নিয়ে আমার এটাই আশা যে একজন অভিবাসী যেন আমারই মতো ভারতে এসে নিজের কেরিয়ার তৈরি করতে পারেন। শুধু তাইই নয়, বহুজাতিক সংস্থার বড় পদে প্রতিষ্ঠিত হোন, যাতে ভারতের অর্থনীতি এবং সমাজে তাঁর আলাদা অবদান থাকে।”
[আরও পড়ুন: চিঠির সঙ্গে রাসায়নিক গুড়ো পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রজ্ঞা ঠাকুরকে, পুলিশের দ্বারস্থ সাংসদ]
সত্য নাদেলার এই বক্তব্যকে পূ্র্ণ সমর্থন করে তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বক্তৃতা করতে গিয়ে যিনি বেঙ্গালুরু থেকে আটক হয়েছিলেন। তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ”আমি খুশি যে সত্য নাদেলার মতো ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ এনিয়ে নিজের মতামত খোলাখুলি বলার সাহস রেখেছেন। এটাই তো আমরা চাই। আন্তর্জাতিক স্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত ভারতীয়রাও এগিয়ে আসুন।”
এর আগে CAA-NRC সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘ফ্যাসিস্ট’ অ্যাখ্যা দিয়ে খোলা চিঠি লিখেছিলেন গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, আমাজনের মতো বহুজাতিক সংস্থার অন্তত ১৫০ জন ভারতীয় কর্মচারী। ‘TechAgainstFascism’ শীর্ষক চিঠিতে তাঁরা মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেলা, অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই, রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানির মতো ব্যক্তিত্বদের কাছে আবেদন রেখেছিলেন, কেন্দ্রের এই আইনের বিরোধিতায় সরব হওয়ার। তাঁরা লিখেছিলেন, ”CAA এবং NRC সর্বতোভাবে মুসলিম-বিরোধী। এটি লাগু হলে, অনেক বেশি সংখ্যক মুসলিম রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বেন, যা ভারতের অর্থনীতির পক্ষেও বিপজ্জনক হতে পারে।” এরপর সত্য নাদেলাই প্রথম CAA নিয়ে মুখ খুললেন। তাঁর আশা, আরও অনেকেই এভাবে আইনের নেতিবাচক প্রভাব বুঝতে পেরে বিরোধিতায় এগিয়ে আসবেন।
[আরও পড়ুন: জেএনইউ ডেটা সংরক্ষণ মামলায় ফেসবুক, গুগল ও হোয়াটসঅ্যাপকে নোটিস]
The post ‘কোনও বাংলাদেশি ভারতের আশ্রয়ে যেন সুপ্রতিষ্ঠিত হন’, CAA ইস্যুতে মন্তব্য সত্য নাদেলার appeared first on Sangbad Pratidin.