সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতকে জগৎ সভায় ফের শ্রেষ্ঠ আসনে বসানোই ছিল লক্ষ্য। সেইমতোই এবারের জি-২০’র (G-20 Summit) মতো বড় আন্তর্জাতিক মঞ্চকে সাজানো হয়েছিল। শুরু থেকে শেষ, সবেতেই ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের ছোঁয়া। এমনকী বিদেশি অতিথিদের খাবার পদেও তাই। ভারতীয় পদ তো বটেই, খারিফ শস্যের স্বাদ ও উপকারিতা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে শনিবারের নৈশভোজে ছিল ‘মিলেট থালি’ (Millet Thali)। সেসবের যেমন সুন্দর নাম, তেমনই খেতে সুস্বাদু, আবার পুষ্টিগুণও অসীম। বাইডেন থেকে হাসিনা, সুনাক থেকে ট্রুডো – খেয়ে সকলে তারিফ করলেন। ভারতের স্বাদ অপূর্ব, এমনই বললেন সবাই। কিন্তু জানেন কি এই ‘মিলেট থালি’ ঠিক কী? কতই বা দাম?
মিলেটের অর্থ বাজরা। খারিফ (Kharif) শস্য হিসেবে জোয়ার, বাজরার কথা তো ভূগোল বইয়ে পড়া হয়েছে। ভারতের কৃষি সম্পর্কে এই নামগুলোর সঙ্গে সবাই পরিচিত কম-বেশি। পাঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ উত্তর পশ্চিম ভারতের ফলন ও খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই নির্ভরশীল এই জোয়ার, বাজরার উপর। বাজরার রুটি কিংবা ডাল ঘরে ঘরে খাওয়া হয়। কিন্তু এসব শস্য দিয়েই যে এমন সুস্বাদু খাবার তৈরি করা সম্ভব, তার খোঁজ আমরা কতটুকুই বা রেখেছি? জি-২০ সম্মেলনের মেনুই সেদিকে আকর্ষণ বাড়াল।
[আরও পড়ুন: ‘গর্ব করার মতো কিছুই হয়নি’, জি-২০’র যৌথ বিবৃতি নিয়ে কটাক্ষ ইউক্রেনের]
শনিবারের নৈশভোজে একাধিক রকমের বাজরার পদ ছিল। কোনওটা সোরগুম, কোনওটা পার্ল মিলেট আবার কোনও ফক্সটেল মিলেট দিয়ে তৈরি। ‘পত্রম’ নামক পদটি আসলে ফক্সটেল মিলেটের পাতা ভাজা, তা দই ও আচার সহকারে পরিবেশন করা হয় বিদেশি অতিথিদের। এছাড়া ‘বণবর্ণম’ পদটি মিলেট দিয়ে তৈরি। উত্তর ভারতীয় বাজরার সঙ্গে দক্ষিণ ভারতীয় কারিপাতার মেলবন্ধনে তৈরি একটি খাবার। মিষ্টান্ন পদ ‘মধুরিমা’ আসলে মিলেটের পুডিং। মেনু কার্ড দেখলেই তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারির পর মধ্যরাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ! ১৪ দিনের জেল হেফাজতে চন্দ্রবাবু নায়ডু]
২০২৩ সালকে ‘মিলেট বর্ষ’ হিসেবে উদযাপন করছে কেন্দ্র সরকার। তাই খাবারদাবারেও তাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মিলেট বা জোয়ার-বাজরা দানাশস্য হওয়ায় তার পুষ্টিগুণ অসীম। প্রোটিন, ফাইবার তো আছেই, এছাড়া নানা রকমের খনিজ পদার্থও রয়েছে এসব খারিফ শস্যে। রয়েছে ভিটামিনও। হৃদরোগের সমস্যা, ডায়বেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ মোকাবিলায় এসব খাবার খুবই কার্যকর। রইল শুধু দামের কথা। তা খানিকটা বেশি বইকী। বাজরার একেকটি রুটির দাম একশো টাকার বেশি। উপমার দাম দেড়শো। আসলে জি-২০’র সৌজন্যে তা যে বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। দর তাই বেড়েছে।