সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে খুন বাংলার এক শিল্পী৷ মুম্বই থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হল কোন্নগরের আর্ট ডিরেক্টরের মৃতদেহ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল শিল্পীর পরিবার ও পরিচিতদের মধ্যে।
মৃত আর্ট ডিরেক্টর বছর সাঁইত্রিশের কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি। বাড়ি কোন্নগরের মাস্টারপাড়ায়। একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার দু’জনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। গত ১০ আগস্ট মুম্বইয়ের বিরার পুলিশ স্টেশন এলাকায় একটি জলাভূমি থেকে উদ্ধার হয় কৃষ্ণেন্দুর ক্ষতবিক্ষত দেহ। একটি বস্তার মধ্যে তাঁর মৃতদেহটি ভরা ছিল।
[আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি নেই, ৫ দিন পর খুলল মুম্বাই-বেঙ্গালুরু সংযোগকারী জাতীয় সড়ক]
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, কৃষ্ণেন্দুকে খুন করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে থাকা ডিজাইনগুলিও উধাও হয়ে গিয়েছে। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর দামি ল্যাপটপ, চার চাকার গাড়ি ও প্রায় ৮০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোনেরও। ছেলের মৃত্যুর কথা শুনে রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন কৃষ্ণেন্দুর মা ছায়া দেবী ও বাবা। তাঁদের দাবি, ছেলেকে যারা খুন করেছে মুম্বই পুলিশ তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক।
কলকাতার আর্ট কলেজ থেকে পাশ করে বেরিয়ে ২০০৮ সালে কাজের জন্য মুম্বই পাড়ি দেন কৃষ্ণেন্দু। এরপর গোরেগাঁওতে তিন বন্ধু মিলে একটা তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। প্রথমে কৃষ্ণেন্দু একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেটি ছেড়ে দিয়ে নিজেই ‘পার্পল মাইন্ড’ নামে ইন্টিরিয়ার ডেকরেশনের কোম্পানি খোলেন। মারাঠি কিছু চলচ্চিত্রে আর্ট ডিরেকশনের কাজ করেন তিনি। তবে সব কাজের ফাঁকে বছরে একবার বাবা-মায়ের কাছে আসতেন কৃষ্ণেন্দু।
[আরও পড়ুন: লাদাখ সীমান্তে পাক যুদ্ধবিমানের আনাগোনা, ঘনাচ্ছে যুদ্ধের মেঘ]
মৃতের মা ছায়া চৌধুরি জানান, গত চার বছর ধরে কৃষ্ণেন্দু বাড়ি আসেননি। আসার কথা বললেই বলতেন, কাজের খুব চাপ রয়েছে। তবে বাবা-মাকে সংসার খরচ বাবদ নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। গত বুধবার সন্ধে সাতটার সময় অসুস্থ ছায়া দেবী ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। কৃষ্ণেন্দু মাকে বলেন, যে তিনি মালবনিতে একটা কনফারেন্সে রয়েছেন। কিন্তু, শনিবার সকালে হঠাৎ মুম্বইয়ের পুলিশ স্টেশন থেকে ফোন করে তাঁকে জানানো হয়, কৃষ্ণেন্দু মারা গিয়েছে। এই খবর পাওয়ার পরেই ছায়া দেবীর এক বোনপো মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। বুধবার তাঁর ছেলের এক জায়গায় পাওনা টাকা নিতে যাওয়ার কথা ছিল বলেও জানান ছায়া দেবী।
সূত্রের খবর, বুধবার কনফারেন্সের পরই এক মহিলার ফোন আসে কৃষ্ণেন্দুর মোবাইলে। এরপরই হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। তারপর থেকেই তিনি গোরেগাঁওয়ের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে ফিরে আসেননি। কোনও সন্ধান না পেয়ে তাঁর বন্ধুরাই মালবনি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে শুক্রবার বিরার থানা এলাকার একটি জলা জায়গা থেকে কৃষ্ণেন্দুর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু, তাঁর সঙ্গে থাকা গাড়ি, ল্যাপটপ ও মোবাইলের কোনও হদিশ মেলেনি। বন্ধুদের প্রাথমিক অনুমান, কৃষ্ণেন্দুর ডিজাইন চুরির জন্য তাঁকে খুন করা হয়েছে৷ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
The post ডিজাইন চুরি করতে খুন! মুম্বইয়ে বাঙালি আর্ট ডিরেক্টরের দেহ উদ্ধারে রহস্য appeared first on Sangbad Pratidin.