সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৪ দিন নিখোঁজ থাকার পর ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সড়ে দাঁড়ালেন মেং হংওয়েই। রবিবার গভীর রাতে মেল করে নিজের পদত্যাগ পত্র কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছেন চিনের এই দুঁদে পুলিশকর্তা৷ জরুরিভিত্তিতে সেই পদত্যাগ পত্র গ্রহণও করেছে ইন্টারপোল৷ সূত্রের খবর, চিনের দুর্নীতিদমন শাখা জেরা করছে তাঁকে৷ তাঁদের হাতেই আটক রয়েছেন মেং৷ তাঁর বিরুদ্ধে, দুর্নীতির দীর্ঘ তালিকা জমা পড়েছে চিনা প্রশাসনের হাতে৷ সেই সমস্ত অভিযোগেরই তদন্ত চালাচ্ছে চিনের ন্যাশনাল সুপারভিশন কমিশনের দুর্নীতি দমন শাখা৷
[মোদির পথে হাঁটলেন ইমরান, শুরু ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ পাকিস্তান কর্মসূচি]
গতমাসেই ফ্রান্স থেকে চিনে গিয়েছিলেন ইন্টারপোল প্রেসিডেন্ট মেং হংওয়েই৷ সেখানে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি৷ হংওয়েইর রহস্যময় অন্তর্ধানের কথা ফ্রান্সে ইন্টারপোলের হেড কোয়ার্টারে জানানোয় খুনের হুমকি পান তাঁর স্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়া ও ফোনে কেউ তাঁকে একাধিকবার প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে বলে জানান তিনি। অপহরণ না কি খুন হলেন ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ট? এই প্রশ্নই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল সমগ্র বিশ্বকে৷ তবে রবিবার গভীর রাতে সেই রহস্যের সমাধান হয়৷ জানা যায় চিনের দুর্নীতিদমন শাখার হাতে আটক রয়েছেন মেং৷ তাঁকে জেরা করছে চিনা কমিউনিস্ট প্রশাসনের দুর্নীতিদমন শাখার অফিসারেরা৷
ইন্টারপোল অর্থাৎ আন্তর্জাতিক অপরাধীদের ধরতে যে পুলিশ সংস্থা রয়েছে তার প্রধান হংওয়েই চিনে পৌঁছেই কী করে নিখোঁজ হয়ে গেলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্তে নামে ফ্রান্সের পুলিশ। ইন্টারপোলের অফিসারদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, পুরনো শত্রুতার জেরে হংওয়েইকে অপহরণ করে খুন করা হয়নি তো? আবার ইন্টারপোলে নাম থাকা কুখ্যাত কোনও দুষ্কৃতী বা তার দলও প্রতিহিংসার জেরে মেং হংওয়েইকে কিডন্যাপ করার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন না কেউ কেউ। রহস্য আরও জটিল হয়েছে তাঁর স্ত্রী হুমকি পাওয়ায়। ২০১৬ সালে ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ট হন ৬৪ বছরের হংওয়েই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র নেতা ছিলেন তিনি। নিরাপত্তা বিভাগের মন্ত্রীও ছিলেন। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে অপরাধ আইন ও পুলিশের নানা কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে হংওয়েইয়ের।
[ট্রাম্পকে বিষ-চিঠি পাঠিয়ে খুনের ষড়যন্ত্র, গ্রেপ্তার প্রাক্তন সেনাকর্মী]
ইন্টারপোল প্রেসিডেন্টের এই ইস্তফা আন্তর্জাতিক মহলে আরও স্পষ্ট করেছে চিনের দাদাগিরির ছবিকে৷ কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই অবাক হয়ে বলছেন, কতটা দাপট এবং সাহস থাকলে তবেই ইন্টারপোলের মতো প্রভাবশালী একটি সংস্থার প্রধানকে আটক করতে পারে জিনপিং প্রশাসন৷ মেং হংওয়েই-কে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছে চিনা প্রশাসনই, এই আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ কেউ৷