সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব (সংশোধিত) আইনের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন। অসম, বাংলা, ত্রিপুরা-সহ একাধিক রাজ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই আইন মানবেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন। আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে এবার বিহারেও। আর সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নামে নিরুদ্দেশ পোস্টারকে ঘিরে সরগরম রাজনৈতিক মহল। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে নীরবতা বজায় রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মূক-বধির ও অন্ধ’ বলে কটাক্ষ করে পোস্টার পড়েছে রাজ্যের রাজধানী পাটনার অধিকাংশ জায়গায়।
সম্প্রতি জনতা দলের (ইউনাইটেড) সহ-সভাপতি তথা নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করায় অস্বস্তিতে পড়ে দল। নীতীশ কুমারের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। তৃণমূলের ভোটকৌশলী শনিবার অবধি মোদি সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এবং এনআরসির (NRC) যৌথ ইস্যুতে। শনিবার সন্ধেয় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা তাঁর দল জেডিইউয়ের সুপ্রিমো নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) তলব করেন প্রশান্ত কিশোরকে। বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক হয় দু’জনের। নীতীশ প্রশান্ত কিশোরকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ইস্যুতে সুর নরম করতে অনুরোধ করেন।
[আরও পড়ুন: নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকের ফল, CAA নিয়ে ভোলবদল প্রশান্ত কিশোরের!]
যদিও, তাতে লাভ হয়নি। নীতীশের দাবি মানা তো দূরের কথা, উলটে দল থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাব দেন পিকে। নীতীশ তাঁর ইস্তফার প্রস্তাব মানেননি। তাঁকে ফের দলে থেকেই, নাগরিকত্ব সংশোধনী ইস্যুতে সুর নরম করতে অনুরোধ করেন। এবারে একটু কাজ হয়। নাগরিকত্ব সংশোধনী ইস্যুতে আক্রমণের সুর খানিকটা নরমও করেন ভোটকৌশলী। তিনি জানান, এককভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু, এনআরসির সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এলে তা বিপজ্জনক।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যখন বাংলায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক তখনই এই প্রসঙ্গে নীরবতা বজায় রেখেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আর সেটা নিয়েই বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে নীতীশ। পাটনার বিভিন্ন জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর নামে পোস্টার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পোস্টারগুলিতে লেখা, ‘ভাল করে দেখুন এই মুখটি, দীর্ধদিন না কিছু বলেছেন না কিছু শুনছেন। এনাকে যে খুঁজে বের করবেন বিহার সদা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।’ আরও কিছু পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘মূক-বধির ও অন্ধ মুখ্যমন্ত্রী! নিরুদ্দেশ, নিরুদ্দেশ, নিরুদ্দেশ!’
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশের সময় সংসদের নিম্ন ও পরে উচ্চকক্ষে তা সমর্থন করেছে জেডিইউ। দলের সাংসদদের এই বিল সমর্থনের নির্দেশ দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন নীতীশ। কিন্তু দলের নেতা প্রশান্ত কিশোর এই আইনের প্রতিবাদ করায় নীতীশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরেছে। যাতে যারপরনাই অস্বস্তিতে দল। আর মুখ্যমন্ত্রীর নামে এই পোস্টারগুলি আরও মাথা ব্যথা বাড়াবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
The post NRC-CAA নিয়ে নীরব, নীতীশের নামে ‘নিরুদ্দেশ’ পোস্টারে ছয়লাপ পাটনা appeared first on Sangbad Pratidin.