সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাট নির্বাচনে বিজেপি জয় হাসিল করেছে ঠিকই। তবে তা অনেকটাই মুখরক্ষার । শাসকদলের স্টার ক্যাম্পেনার ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গড়রক্ষায় সমর্থ হলেও, তিনি ম্যাজিক দেখাতে পারেননি। আর তাই গুজরাটের তিন তরুণ নেতা এবার পালটা দিলেন মোদিকে। জানালেন, মোদির বয়স হয়েছে। এখন ওঁর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।
[ বিরাটের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি নেতার ]
এবারের গুজরাট নির্বাচনে তিন তরুণ মুখের আবির্ভাব। শুধু সে রাজ্যের রাজনীতিতে নয়, দেশের সার্বিক প্রেক্ষাপটেও। হার্দিক প্যাটেল, অল্পেশ ঠাকোর ও জিগনেশ মেভানি। পাতিদার, দলিত ও অনগ্রসর শ্রেণির এই তিন তরুণ নেতা জোট বাঁধার ফলেই বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। কৃতিত্ব খানিকটা রাহুল গান্ধীরও। তিন নেতাকে তিনিই এক জায়গায় আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে দূর্বলতা ছিল সাংগঠনিক স্তরে। তা আরও জোরদার হলে বাইশ বছরের মৌরসিপাট্টার মায়া ছাড়তে হত বিজেপিকে। বেশ কয়েকটি আসনে অল্প মার্জিনে টেনেটুনে পাশ করেছে বিজেপি। এমনকী মোদির নিজের জন্মস্থানেও পরাজয় হয়েছে বিজেপির। সুতরাং সামগ্রিক চিত্র জানাচ্ছে, মোদির গ্রহণযোগ্যতার থেকেও এই তিন তরুণ তুর্কির উপর মানুষের ভরসা অনেকটাই বেশি।
[ পরীক্ষাতেই ডাহা ফেল, উদ্বোধনের আগে দুর্ঘটনার কবলে দিল্লির চালকবিহীন মেট্রো ]
মঙ্গলবার সংসদে ঢোকার মুখে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, গুজরাটে মোদির বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মোদি নানা কথা বলছেন বটে, কিন্তু মানুষ তা শুনছেন না। সে কথার রেশ ধরেই যেন সর্বভারতীয় এক সংবাধমাধ্যমকে জিগনেশ মেভানি জানালেন, “মোদির বয়স হয়েছে। ওঁর বক্তৃতায় আর কোনও কনটেন্ট নেই। সেই একই একঘেয়ে কথা বারবার উনি বলে চলেছেন। ওঁর উচিত এখন বিশ্রাম নেওয়া। রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো।” গুজরাটে বিজেপির জয়কে অমিত শাহ জাতপাতের রাজনীতির বিরুদ্ধে জয় বলে চিহ্নিত করেছিলেন। বিজেপি নেতারা বলছেন, এ জয় উন্নয়নের। জিগনেশের পালটা দাবি, তাঁরা যখন উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তখন কিন্তু বিজেপি কোনও জবাব দিতে পারেনি। জাতপাতের রাজনীতির প্রসঙ্গও তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তাঁরা যখন চাকরির কথা বলেছিলেন তখন সমগ্র গুজরাটের মানুষের কথাই বলা হয়েছে। কোথাও পাতিদার বা দলিতদের কথা আলাদা করে বলা হয়নি। মানুষ এখন তাঁদের কথাই শুনছেন, বক্তব্য তরুণ নেতার। দলিতদের উপর যে অন্যায়-অত্যাচার হযেছে, মানুষ তো তা ভুলে যায়নি। ঠিক সে কারণেই বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে দলিত-পাতিদার ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষরা, মত জিগনেশেরমত জিগনেশের।
[ ‘পাকিস্তান কখনও ষড়যন্ত্র করে না’, মোদির অভিযোগ খারিজ ফারুক আবদুল্লার ]
তরুণ এই নেতার দাবি, গুজরাট নির্বাচনের সবথেকে বড় সাফল্য হল গুজরাট মডেলের নামে মোদির ভাবের ঘরের চুরি ধরা পড়ে যাওয়া। তাঁর মতে, যে উন্নয়নের মডেল তুলে ধরা হয় তা কখনওই সাধারণ মানুষের স্বার্থে নয়। অগণতান্ত্রিকও বটে। আর মুখে যা বলা হয়, কাজে তা করা হয় না। মোদি, শাহকে হাতেকলমে কাজ করতে হবে। নচেত মানুষ আর ভুলবেন না। ৯৯-৭৯ ফলাফল যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বদলে যাবে, সে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এই তরুণ নেতায বয়সের কারণে হার্দিক ভোটে দাঁড়াননি। কিন্তু জিগনেশ ও অল্পেশ দু’জনেই বিধায়ক হয়েছেন। একজন নির্দল প্রার্থী হিসেবে। অন্যজন কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী। সবমিলিয়ে বিধানসভায় যে বিজেপিকে কড়া বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন জিগনেশরাই।
The post ‘মোদি বৃদ্ধ হয়েছেন, ওঁর এবার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া উচিত’ appeared first on Sangbad Pratidin.