দুলাল দে: কিছু ফুটবলার যেরকম দল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার দিকে পা বাড়িয়েছেন, সেরকম অন্য দল থেকেও ফুটবলার তুলে আনছে মোহনবাগান। আর এ ব্যাপারে সাম্প্রতিকতম সংযোজন, জাতীয় দলের উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়ন। যিনি এই মুহূর্তে জাতীয় দলের হয়ে দোহায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে ব্যস্ত। বেঙ্গালুরু এফসি থেকে তাঁকে তুলে এনে পাঁচ বছরের জন্য সই করিয়ে নিলেন মোহনবাগান কর্তারা। একই সঙ্গে জামশেদপুর এফসিতে লোনে যাওয়া প্রণয় হালদারকেও ফিরিয়ে নিচ্ছে সবুজ-মেরুন টিম ম্যানেজমেন্ট। ইমামিকে ইনভেস্টর হিসেবে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুম্বই সিটি এফসির উইংব্যাক, মহম্মদ রকিবকে ২ বছরের চুক্তিতে সই করিয়ে নিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব (East Bengal)।
ডেভিড উইলিয়ামস, প্রবীর দাস সরকারি ভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, দল ছাড়ছেন। প্রবীর যাচ্ছেন বেঙ্গালুরু, আর ডেভিড উইলিয়ামস মুম্বই সিটি এফসিতে। রয় কৃষ্ণকেও মুম্বই সিটি এফসি-সহ বেশ কিছু দল বড় প্রস্তাব দিয়ে বসে আছে। যদিও সবুজ-মেরুন কর্তাদের সঙ্গেও সমান তালে আলোচনা চালাচ্ছেন রয় কৃষ্ণ। ফলে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, রয় কৃষ্ণ পরের মরশুমে কোথায় খেলবেন। কিন্তু প্রবীর ও উইলিয়ামস দল ছাড়ায় বসে নেই মোহনবাগান (Mohun Bagan)। জাতীয় দলের কেরলিয়ান উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়নকে পাঁচ বছরের জন্য তুলে নিলেন কর্তারা।
[আরও পড়ুন: ‘অতিরিক্ত লোভ আর উচ্চাকাঙ্ক্ষাই শেষ করে দিল মেয়েকে’, আক্ষেপ মঞ্জুষার মায়ের]
হাবাস যেরকম ডিফেন্সিভ মানসিকতার কোচ ছিলেন, ফেরান্দো সেখানে পুরোপুরি উলটো। শুরু থেকে আক্রমণে যেতে ভালবাসেন। সেই কারণেই ভারতীয় দলের দ্রুতগতির উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়নকে পছন্দ ফেরান্দোর। সবুজ-মেরুন কর্তারা জানেন, বয়স কম বলে আশিকের যে কোনও দলে সইয়ের জন্য চাহিদা থাকবে। তাই শুরুতে চার বছরের জন্য ভেবেও শেষ মুহূর্তে পাঁচ বছরের জন্য আশিক কুরুনিয়নকে সই করিয়ে নিল মোহনবাগান।
এমনিতে সামনের মরশুমের জন্য মোহনবাগান দলে খুব বেশি ফুটবলার রিক্রুট করার জায়গা নেই। বেশিরভাগ ফুটবলারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। যেমন মনবীরের সঙ্গেও চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন চোটের তালিকায় থাকা সুসাইরাজকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সুসাইরাজ যাচ্ছেন সম্ভবত ওড়িশা এফসিতে। ফেরান্দোর তালিকামতো ধীরে ধীরে নিজেদের দল গুছিয়ে নিচ্ছে মোহনবাগান। কোন কোন পজিশনে ফুটবলার লাগবে, তা ঠিক করা হচ্ছে ফেরান্দোর সঙ্গে কথা বলেই। আর সেই সূত্রেই জাতীয় দলের দ্রুতগতির উইঙ্গারের সবুজ-মেরুন জার্সিতে আগমন। গত মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে খেলেছেন আশিক।
ফেরান্দোর পরামর্শে মোহনবাগান কর্তারা এই মুহূর্তে এশিয়ান কোটায় একজন আক্রমণভাগের বিদেশি ফুটবলার খুঁজছেন। ডেভিড উইলিয়ামসে যেভাবে মোহনবাগানকে সার্ভিস দিয়েছেন, সেরকম মানের একজন এশিয়ান কোটার বিদেশি ফুটবলার খোঁজা হচ্ছে। ইনভেস্টর হিসেবে ইমামির নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দলবদলের বাজারে বসে নেই লাল-হলুদ কর্তারাও। তবে এখনও যেহেতু দু’পক্ষর চুক্তির যাবতীয় শর্তগুলি ঠিক হয়নি, তাই এখনই ফুটবলার তুলতে পুরোপুরি ঝাঁপিয়ে পড়তে পারছেন না ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। তার উপর ফুটবলার রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফিফার প্রথম উইন্ডো খুলছে ৯ জুন। অথচ কোয়েস এবং শ্রী সিমেন্টের সময়ের ফুটবলারদের বেতন না মেটানোয় এখন ফুটবলার সইয়ের ব্যাপারে ব্যান রয়েছে। ফলে ইমামির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হলে সবার আগে ফুটবলারদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে সইয়ের ব্যান তুলতে হবে। তারপর সই। তবুও আইএসএল (ISL 2022-23) খেলা ফুটবলারদের সই করানো হচ্ছে। যেমন মহম্মদ রকিবকে সই করানো হয়েছে।